যশোর অফিস
যশোরের গডফাদার শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন জাবির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে নিহত আবরার মাশরুন নীলসহ অন্যান্য নিহতদের নিয়ে প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে ‘শহীদ’ পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।
বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর আগে শহীদ পরিবারের সদস্যরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করে প্রথম আলো পত্রিকার কপি আগুনে পোড়ান।
আবরার নীলের মা জেসমিন আক্তার অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, “আমার নয় বছরের বাচ্চা কীভাবে দুর্বৃত্ত হলো? সে তো মানুষকে সাহায্য করতে গিয়েছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে পুড়ে মারা গেছে। ও ছিল নিষ্পাপ শিশু। তাকে নিয়ে রাজনীতি করবেন না, লুটকারীর কলঙ্ক দেবেন না।”
প্রথম আলোর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ৫ আগস্ট জাবির হোটেলের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২৪ জনের মধ্যে ১৬টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা কেউ ‘শহীদ’ হিসেবে স্বীকৃতি চান না। তবে নিহতদের স্বজনরা এ তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন। তাদের অভিযোগ, কোনো সাংবাদিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি, অথচ প্রতিবেদনে তাদের নামে মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শহীদদের স্মৃতিকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা। এতে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের বিতর্কিত করে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, কোনো ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা না বলে তার নামে মন্তব্য ছাপানো নীতিবিরোধী কাজ। বক্তারা প্রথম আলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সাবেক আহ্বায়ক রাশেদ খান, শহীদ ইউসুফ আলীর মা শাহীনা খাতুন, শহীদ সোহানুর রহমান সোহানের বাবা আনোয়ার হোসেন লাল্টুসহ নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের দিনে জাবির হোটেলের অগ্নিকাণ্ডে ২৪ জন নিহত হন। তাদের অনেককে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ’ হিসেবে অভিহিত করা হলেও প্রথম আলোর প্রতিবেদনে তা প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। এতে স্বজনদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।