জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
ছয়টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা না করেই খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয় বলে অভিযোগ করেছে এনসিপি।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও এই খসড়া গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের ২১তম দিনের সংলাপের বিরতিতে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনার প্রক্রিয়া নিয়েই আলোচনা হয়নি। অথচ হঠাৎ করে খসড়া প্রকাশ করা হলো, যা আমাদের কাছে পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।
তিনি আরও বলেন, যেসব বিষয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, নির্বাচনের আগেই সেগুলোর আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে জাবেদ রাসিন জানান, কয়েক দিন ধরেই ‘র্যাংক চয়েজ’ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী বিচার বিভাগ থেকে দুজন সদস্য যুক্ত করে মোট সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এই প্রস্তাবে এনসিপিসহ অধিকাংশ দল একমত হলেও বিএনপি ও কিছু মিত্র দল আপত্তি জানিয়েছে।
এনসিপি নেতা আরও জানান, আমরা বলেছি, যেসব মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া ফ্যাসিবাদী প্রবণতা দূর করা যাবে না, সেগুলো বাস্তবায়ন না হলে আমরা জুলাই সনদে সই করব কি-না, তা আমাদের ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে মঙ্গলবার জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের জানান, তার দল আগামী জাতীয় নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই দেখতে চায় এবং এ বিষয়ে প্রায় সব দল একমত।
তিনি বলেন, সাত সদস্যের প্রস্তাবিত বাছাই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিরোধী নেতারা ও বিচারপতিরা থাকবেন। একমত না হলে র্যাংক চয়েজ ভোটিং হবে। এতে হর্স ট্রেডিংয়ের ঝুঁকি কমে।
তাহের বলেন, বিএনপি প্রস্তাব করেছে বিষয়টি সংসদে পাঠাতে, তবে জামায়াত মনে করে, সেখানে গেলে সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে। তিনি বলেন, এই প্ল্যাটফর্মে ৩০টিরও বেশি দলের প্রতিনিধিত্ব আছে, অথচ সংসদে মাত্র পাঁচ-ছয়টি দল। এখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত।
তিনি জানান, জামায়াত নিজস্ব একটি সনদের খসড়া তৈরি করছে এবং তা কমিশনে জমা দেবে। কমিশনের জুলাই সনদের খসড়া সম্পর্কে তাহের বলেন, এটা অসম্পূর্ণ এবং কিছু অংশ বিপজ্জনক। যদি এটা চূড়ান্ত হয়, তাহলে আমরা তা মেনে নিতে পারি না।
সংলাপ বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকর না হলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।