প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু না হওয়ায় রাজনৈতিক অজুহাত: এনসিপিসংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনাচ্ছেন সংগঠনটির কো-অর্ডিনেটর তারিক আদনান মুন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া এখনো শুরু না হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অজুহাত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় রোডম্যাপ, গাইডলাইন বা সময়সীমা এখনো ঘোষণা করা হয়নি, যা উদ্বেগজনক।
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংগঠনটির কো-অর্ডিনেটর তারিক আদনান মুন লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিশ্বজুড়ে থাকা দেড় কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে অবদান রাখছেন, তার স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখনো প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। বরং রাজনৈতিক ঐক্য না হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, অবকাঠামো ও গ্রামীণ জীবনযাত্রাকে টিকিয়ে রেখেছে। তবুও তারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত থাকছে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি তিনটি প্রধান দাবি:
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি-ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি তিনটি প্রধান দাবি উত্থাপন করা হয়:
১. ভোটার নিবন্ধন শুরু ও রোডম্যাপ ঘোষণা
১৪ আগস্টের মধ্যে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। যেসব প্রবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই কিংবা যারা নতুন ভোটার, তাদের নিবন্ধনের জন্য দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে অবিলম্বে উদ্যোগ নিতে হবে।
২. পোস্টাল ও অনলাইন ব্যালটের স্বচ্ছতা
পোস্টাল বা অনলাইন ব্যালটের ভোট যেন সময়মতো ও স্বচ্ছভাবে গণনায় অন্তর্ভুক্ত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যালট যাচাই, প্রেরণের ঠিকানা, গ্রহণযোগ্য সময়সীমা ও মনিটরিং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো স্পষ্টভাবে উত্তর দিতে হবে।
৩. স্থায়ী কারিগরি কমিটি গঠন
২০২৬ সালের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনসহ ভবিষ্যতের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়। এতে প্রযুক্তিবিদ, আইনজ্ঞ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও প্রবাসী প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।
পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২৭ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ‘আমার ভোট আমি দেব, প্রবাস থেকেও অংশ নেবো’ স্লোগানে অনলাইন ক্যাম্পেইন, গণজমায়েত এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে খোলা চিঠি প্রেরণের কর্মসূচি পালন করা হবে।
১৪ আগস্টের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১৫, ১৬ ও ১৭ আগস্ট ‘ডায়াস্পোরা রাইজিং ফর ভায়োলেটিং রাইটস’ শিরোনামে গ্লোবাল প্রটেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব সাইফ মোস্তাফিজ, ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মাহাবুব আলম ও যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম।
এ ছাড়া অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের পলিসি উইং কো-অর্ডিনেটর দিলশানা পারুলসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় নেতারা।