যশোর প্রতিনিধি :
যশোর সদরের নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চার গ্রামের চলতি আমন মৌসুমে ধানচাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা। একটি প্রভাবশালী মহল ঘুরুলিয়া হয়ে কয়েতখালি-চিংয়েডাঙ্গা খালে পাটাতন ও বান্দাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। এ কারণে আমন মৌসুমে ধানচাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। এতে ওই চার গ্রামের কয়েকশ’ হেক্টর জমি আমন মৌসুমে ধানচাষ বন্ধ হয়ে গেছে। শংকা ও উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন ওই এলাকার কৃষক। অবিলম্বে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করে জলাবদ্ধা থেকে মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে কৃষকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঘুরুলিয়া হয়ে কয়েতখালি-চিংয়েডাঙ্গা পর্যন্ত একটি খাল রয়েছে। এই খাল দিয়ে ছোট শেখহাটি, ঘুরুলিয়া, আড়পাড়া ও শাহপুর গ্রামের মাঠে পানি প্রবাহ হয়। কায়েতখালী, ঘুরুলিয়া, চিংয়েডাঙ্গা, তালবাড়িয়া ও ধানঘাটা ব্রিজ পর্যন্ত খালটিতে ইচ্ছেমত পাটা বসিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। মাটি,পাড় ও খালে যত্রতত্র বান্দাল এবং পাটার কারণে পানি নিস্কাশন হচ্ছেনা। যে কারণে ধানঘাটা ব্রিজ হয়ে জলেশ্বর বিলে যে পানি সরবরাহ হতো তা হচ্ছেনা বললেই চলে। এ কারণে সদ্য বর্ষণে পানি কমছেনা ওই এলাকার মাঠগুলোতে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
এলাকাবাসীর দাবি, এখানে দ্রুত প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে পাটা ও বান্দাল অপসরণ করলে এবং যে মাটি ও পাড় দিয়ে পানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সেগুলো কেটে দিলে পানি প্রবাহ বাড়বে। আর খাল হয়ে পানি জলেশ্বরের বিলে পড়লেও পানি সরে যাবে মাঠ থেকে। ফলে কৃষক তাদের আমন মৌসুমে চাষাবাদ শুরু করতে পারবে।
ঘুরুলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পাটার কারণে জলাবদ্ধতা কমছেনা। জলেশ্বরের বিলে পানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রুত এর প্রতিকার না হলে শ’শ’ কৃষক এবার পথে বসে যাবেন। একটি ধানও উঠবেনা। তিনি দ্রুত এ ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অধিকাংশই প্রান্তিক ও হতদরিদ্র কৃষক। কয়েক বিঘা জমি চাষাবাদ করেই চলে তাদের সংসার। এ অবস্থায় জলাবদ্ধতায় আবাদ বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। জলাধার বন্ধ করার কারণে বিপাকে পড়েছেন তারা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, যে খাল পাটা ও বান্দাল দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে, সেটি দিয়ে চার গ্রামের মাঠের পানি নিস্কাশিত জলেশ্বর বিলে যেত। ফলে কুষক তাদের চাষাবাদ করতো। কোন সমস্যা হতো না। এখন খালে পাটা দিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব মাঠের পানি আগামী ৬ মাসেও নামবে বলে মনে হয় না।
জানতে চাইলে যশোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, এলাকাবাসীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।