প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনায় মামলা

Share

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি : কেশবপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদের বসত বাড়িতে হামলা, আসবাবপত্র ও মালামাল ভাংচুর এবং নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুটপাটসহ ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় অবশেষে ৯ এপ্রিল আদালতে মামলা করা হয়েছে। যার নং- সি আর ২৩৪/২৫। মামলাটি করেছেন আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদের পিতা শহীদ উল্লাহ। এঘটনার তিব্র নিন্দা ও  হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন কেশবপুর প্রেসক্লাবসহ কর্মরত সাংবাদিকরা। দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে কঠোর আন্দোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষনা দিয়েছেন সাংবাদিকরা।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মোঃ শহীদউল্লাহ একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি কেশবপুর পৌর শহরের মধ্যকুল মৌজার আর এস ৭২৭ খতিয়ানের হাল ৩৮২৬ দাগের ২০ শতক জমি ১৯৮৪ সালে পাশ্ববর্তী রজব আলী বিশ্বাসের নিকট থেকে ক্রয় করে তার নামে ১৫ শতক ও তার স্ত্রীর নামে ৫ শতক রেজিষ্টি করে ভোগদখল করে আসছেন। ক্রয়কৃত ওই জমি শহীদউল্লাহ  নিজের নামে রেকর্ড, নামপত্তন ও যথাসময়ে অনলাইন খাজনা পরিশোধ করে অদ্যবধি বসতবাড়ি নির্মান করে প্রায় ৪০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। রজব আলী বিশ্বাস অত্যন্ত ধুরন্ধর হওয়ায় বিক্রয় করা জমি দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ব্যকডেটে তিনি ওই জমি মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তির কাছে দলিল করে দিয়ে একই জমি পরবর্তীতে নিজের স্ত্রীর নামে দলিল করে দেন বলে সূত্র জানায় । রজব আলী বিশ্বাসের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম ১৯৮৬ সালে ওই জমির মালিক শহীদুল্লাহ মেনে নিয়েই কোর্টে আমানত মামলা করেন।মামলাটি আদালত পরবর্তীতে খারিজ করে দেন। এরপর নুরুন্নাহার বেগম আদালতে একটি মামলা করেন। সে মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় চলতি বছর গত ২৭ ফেব্রæয়ারি ভোরে রজব অলী ও তার ছেলে মাহাবুবুর রশিদ সবুজের নেতৃত্বে তার ছোট ভাই বিপ্লব হোসেন, আমজাদ হোসেন সাগর, আফজাল হোসেন পল্টু, চাচাতো ভাই নাহিদ ইসলাম সুমনসহ ৫০/৬০ জনের একদল সন্ত্রাসী বাশের লাঠি, লোহার রড,হাতুড়ী, কুড়ালসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শহীদ উল্লাহ এর বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে মারপিট, ভাংচুর ও লুটপাট করে। হামলাকারীরা দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে প্রায় ৫/৬ টি ঘরের মালামাল ও দুইটি ঘরের মধ্যে থাকা আসবাবপত্র,আলনা, সোকেজ,ফ্রিজ,ড্রেসিং টেবিল, দুইটা মোটর সাইকেলসহ সকল মালামাল ভাংচুর করে নারকীয় তান্ডব চালায়। হামলাকারী সন্ত্রাসীরা ঘরের ওয়াড্রবের ড্রুয়ার ভেঙ্গে নগদ ২ লক্ষ টাকা ও স্টিলের আলমারী ভেঙ্গে ৮ লক্ষ টাকার ৫ ভরি স্বর্নালংকার লুটপাট করে নিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে। হামলাকারীরা শহীদ উল্লাহ ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল আমিনকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বসতবাড়ি দখল করে নিয়ে তান্ডব চালাতে থাকে। পরবর্তীতে প্রতিবেশিদের সহায়তায় থানা পুলিশ ও প্রশাসনের দপ্তরে অভিযোগ দিলে কেশবপুর থানার পুলিশ তালা খুলে শহীদউল্লাহ ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন। হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় মামলা করার চেষ্টা করা হলেও হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেশবপুর থানা পুলিশ থানায় মামলা নিতে অপরগতা প্রকাশ করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কেশবপুর সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ করা হলে সেখানে দুপক্ষ নিয়ে বসে কাগজপত্র যাচাই পূর্বক শহীদ উল্লাহ ও তার স্ত্রীর নামে দলিল,রেকর্ড, নামপত্তন ও অনলাইন খাজনা প্রদানের রশিদ রয়েছে বলে জানান। কিন্তু রজব আলী বিশ্বাস প্রয়োজনীয় কাগজ বা ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি বলে সূত্র জানায়। সে কারনে একটি অঙ্গীকারনামা করে নেন সেখানে উভয় পক্ষ স্বাক্ষর করেন। অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করেন, রজব আলী ও তার ছেলে মাহবুবুর রশিদ সবুজদের মামলা আদালতে চলমান থাকায় মামলার রায় না পাওয়া পর্যন্ত শহীদউল্লাহর বাড়িতে পুনরায় হামলা না করার নির্দেশ দেন। আবার হামলা করলে সেনাবাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নিবে বলেও হুশিয়ার করে দেনবলে নির্ভর যোগ্য সূত্র জানায়।
এবিষয়ে কেশবপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ বলেন, প্রতিপক্ষরা আবারো হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। পরিবার নিয়ে তিনি আতংকের মধ্য রয়েছেন। এবিষয়ে তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ পুলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Read more