যশোর সদর হাসপাতালের তৎকালীন “ঔষুধচোরা”স্টোরকিপার আলোচিত সাইফুলের নামে অভিযোগ

Share

যশোর প্রতিনিধি 

জেনারেল হাশপাতালের আলোচিত স্টোরকিপার “ঔষধ চোরা” সাইফুল ইসলাম মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আসার জন্য তদবীর মিশনে নেমেছেন ‘ অবৈধভাবে টাকা নিয়ে তাকে সহযোগিতা করছেন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি তদবীর মিশনটি ফাঁস হয়ে গেলে হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং চিকিৎসকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
হাসপাতালের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে,যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের স্টোরকিপার “ঔষধ চোরা” সাইফুল ইসলামকে ২০২৩ সালে ৯ এপ্রিল ওষুধ চুরির অভিযোগে যশোর থেকে শাস্তিমূলক বদলী করা হয় মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

এরপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অসাধু কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যশোরে আসার জন্য তদবীর মিশন চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন ধুরন্ধর সাইফুল ইসলাম। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিডি (অ্যাডমিন) লুৎফর রহমানের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকার মিশন নিয়ে ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মকর্তাদের কাছে তদবীর মিশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কাজে ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তারাও সহযোগিতা করছেন বলে হাসপাতালে চাউর হয়েছে।

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, স্টোরকিপার “ঔষধ চোরা” সাইফুল ইসলাম যদি এ হাসপাতালে ফিরে আসেন। তাহলে সরকারি ওষুধ চুরি হবে ব্যাপক হারে। হাসপাতালের রোগীরা সরকারি পর্যাপ্ত ঔষুধ পাবেন না। একই কথা বলেন, হাসপাতালের সেবিকার ইনচার্জরা। অনেকে বলেন, স্টোরকিপার ওরফে”ঔষধ চোরা” সাইফুল ইসলাম শুধু ওষুধ চোর নয়, ওষুধ পাচারকারীও ওয়ার্ড ইনচার্জদের অডিটের নামে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। বাদ যাননা হাসপাতালের ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদারাও। তাকে কৌশলে ফেলে টাকা আদায় করেন। ফলে তার আগমনে যশোর জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সেবিকা এবং চিকিৎসকরা কেউ ভাল থাকবে না।

প্রসঙ্গত. ২০২৩সালের ৯ এপ্রিল খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা.মোঃ মঞ্জুরুল রশিদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল এর হাসপাতাল যশোরের “ঔষধ চোরা” স্টোর কিপার সাইফুল ইসলামকে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেশে বদলি করা হয়। শাস্তিমূলক এই বদলিতে যশোর জেনারেল হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। বেশ নড়াচড়ে বসেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার খবর বেরিয়ে আসে, বিভিন্ন ভুক্তভোগী মহল থেকে। আর হাসপাতালে দায়িত্বে থাকাকালে বিভিন্ন অনিয়ম ঔষধ চুরিরঘটনা প্রকাশ্যে আসে। বদলী আদেশ যশোরে পৌঁছানোর দিনেও দুর্নীতিবাজ সাইফুল হাসপাতালের স্টোর থেকে এক ইজিবাইক ভরে ঔষধ পাচার করে যা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ও দেশের প্রভাবশালী ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলো সম্প্রচার করেছে। এসময় তাকে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে তৎকালিন আরএমও আ.সামাদ এর বিরুদ্ধে। এমনকি স্টোর কিপার সাইফুল ইসলাম বদলী হয়ে যাওয়ার পরও তার নেতৃত্বে ১৬ জুলাই জেনারেল হাপাতালের ইমারজেন্সি থেকে কিছু পরিমাণ গজ ব্যান্ডেজ তুলাসহ অন্যান্য কাগজপত্র চুরি হয়ে যায়। সেই গজ ব্র্যান্ডের চুরির ঘটনা তদন্ত হলেও ঔষধচোরা সাইফুল ইসলামের ওষুধ চুরির চুরির ঘটনা এখনো অন্তরালে রয়ে গেছে।

সূত্রগুলো বলছে,স্টোর কিপার সাইফুল ইসলাম চাকরি জীবনে ১০ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময় চাকরি পায়। তৎকালীন সিভিল সার্জন ডাক্তার আতিকুর রহমান খানের আমলে তার চাকরি হয়। আরে ঘুষের টাকা তুলতে যেয়ে নানান ভাবে সাইফুল ইসলাম ওষুধ চুরির ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। চাকরির শুরুতে প্রথমে মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। আর এখানেও অনিয়ম দুর্নীতির কারণে সেখান থেকে তৎকালীন যশোর সিভিল সার্জন ডা আতিকুর রহমান খাঁন তাকে বদলির সুপারিশ করেন। তাকে ওই সময় বাগেরহাটে বদলি করা। এরপর প্রতিটি ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক বদলীর আদেশ হয়।

এ বিষয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সাবেক স্টোর কিপার সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করে তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি তার ফোন রিসিভ করেননি। ফলে এবিষয়ে তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।

Read more