যশোর প্রতিনিধি: মাগুরা মহম্মদপুর বাবুখালি আদর্শ কলেজের কর্মচারী (অব.) বীরমুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস হোসেনকে দুর্নীতি মামলায় ৬ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) এসএম নূরুল ইসলাম এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন।
ইদ্রিস হোসেন মহম্মদপুরের হরিনডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল মোল্লার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম বিপ্লব।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মহম্মদপুর বাবুখালি আদর্শ কলেজে কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস হোসেন বাবুখালি আফতাব উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণী পাশের একটি সনদপত্র দিয়ে আবেদন করেন। সনদপত্রে তার জন্ম সাল ছিল ১৯৬৮ সালের ২২ আগস্ট। তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর ১৯৯৪ সালের ৫ নভেম্বর এমপিওভুক্ত হন এবং নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। ২০১৭ সালের ১ মার্চ ইদ্রিস হোসেন কলেজ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। একই সাথে ইদ্রিস আলী বীরমুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় চাকরির সময় নিয়মিত ভাতা গ্রহণ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন এমন অভিযোগ পাওয়ায় প্রাথমিক তদন্ত করে জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কমিয়ে ইদ্রিস হোসেন কলেজে যোগদান করে নিয়মিত বেতন ভাতা গ্রহণ এবং একই সময় তিনি বীরমুক্তিযোদ্ধার ভাতা গ্রহণ করেছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৯ সালের ১৯ জুন ইদ্রিস হোসেনকে আসামি করে মহম্মদপুর থানায় দুর্নীতি দমন আইনে দুদক সমন্বিত যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ মামলার তদন্তকালে জানা যায় ইদ্রিস হোসেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও দুর্নীতির মাধ্যমে কলেজে নিয়োগ নিয়ে ৮ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ টাকা গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুর্নীতির সাথে জাড়িত থাকায় দুদকের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর মাগুরা জেলা জজ আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য যশোর স্পেশাল জজ আদালতে বদলি করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি ইদ্রিস হোসেনের বিরুদ্ধে ৪২০ ও ৪৬৮ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৩ বছর করে সশ্রম করাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। সাজাপ্রাপ্ত ইদ্রিস হোসেন কারাগারে আটক আছেন।