জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসছেন চুড়ান্ত করা হয়েছে

Share

ঢাকা অফিস: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসছেন, তা অনেকটাই চূড়ান্ত হয়েছে। দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন দুটি পদও সৃষ্টি করা হচ্ছে। আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র ও মুখ্য সংগঠকের পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নামে দুটি পদ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইতিমধ্যে সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে একটি প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ও শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সভা করে। প্রথম সভায় দলের আত্মপ্রকাশের সময়, অনুষ্ঠানের ধরন, শৃঙ্খলা, উপস্থিতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আয়োজনের শৃঙ্খলার জন্য কমিটি গঠন এবং দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রণয়নের জন্য প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদগুলোতে আসছেন। এই দলের আহ্বায়ক পদে নাহিদ ইসলামের মনোনয়ন নিয়ে শুরু থেকেই জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কারও কোনো আপত্তি ছিল না। সদস্যসচিব হিসেবে কে আসবেন, মূলত তা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। সমঝোতার ভিত্তিতে এই পদে আখতার হোসেনের নাম অনেকটাই চূড়ান্ত। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব।
এছাড়াও দলের মুখ্য সংগঠক ও মুখপাত্র পদে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে দেখা যেতে পারে বলে এই নেতারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে সমঝোতার ভিত্তিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আলী আহসান জুনায়েদ ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব পদে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী আসতে পারেন বলে জানা গেছে।
নতুন দল ২৬ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করতে পারে। শুরুর দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আত্মপ্রকাশের কথা থাকলেও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দলটি আত্মপ্রকাশ করতে পারে। দলটির আয়োজনে নানা কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে দলের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এর আগে গত কয়েক সপ্তাহে নাগরিক কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসবেন, তা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন ভাবধারার রাজনীতি করা তরুণরা রয়েছেন। এরমধ্যে একটি অংশ সাবেক ছাত্রশিবিরের নেতা রয়েছেন। এছাড়াও বাম ঘরানার ও মধ্যমপন্থি রাজনীতি করা তরুণরাও রয়েছেন। ছাত্রশিবিরের তরুণরা নতুন দলের শীর্ষ পদে নিজেদের পছন্দের নেতা বসাতে চাইছিলেন।
বিষয়টি শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আসে। এসময় শিবিরের নেতা আরেফীন মোহাম্মদ, রাফে সালমান রিফাত গণঅভ্যুত্থানে নিজেদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
তবে নাগরিক কমিটির শীর্ষ এক নেতা বলেছেন, নতুন দল গঠনের আগে এ ধরনের মতবিরোধকে তারা স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তার সমাধানও হয়েছে। তবে কেবল অভ্যুত্থানের অবদান নয়, বরং রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।

দল গঠনের বিষয়ে নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ জনমত জরিপ যে কর্মসূচি শুরু করেছি। সেখানে আমাদের কাছে লক্ষাধিক উপাত্ত এসেছিল। আমরা সেগুলো নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করেছি। পার্টি তৈরির জন্য ইতোমধ্যে নানা ধরনের প্রস্তুতিমূলক কমিটি হয়েছে। সামনের সপ্তাহের শেষদিকে আমরা আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে পারব বলে আশা রাখি।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দলের প্রস্তুতির বিষয়ের সভা সম্পর্কে তিনি বলেন, সভায় আত্মপ্রকাশের সময়, আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের ধরন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শৃঙ্খলা, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন কমিটি করা হয়েছে।
তবে নেতৃত্ব এখনো পুরোপুরি চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন আখতার। তিনি বলেন, সংগঠনের নেতৃত্ব এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলমান আছে। গ্রহণযোগ্যতা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং আমাদের রাজনৈতিক লক্ষ উদ্দেশ্য ও ভীষণ-মিশনে একাত্মবোধের জায়গাগুলো বিবেচনা নিয়ে আমরা বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই নেতৃত্ব নির্বাচন করব।

Read more