ঢাকা অফিস: বলা হয়ে থাকে মায়ের গর্ভ মানব সন্তানের জন্য সব থেকে নিরাপদ জায়গা। আর পৃথিবী দেখার আগেই সেই মায়ের গর্ভে হন্তারকের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল শিশুর। মর্মান্তিক এমন ঘটনা ঢাকার যাত্রাবাড়ির।
নিজের বাসায় ২২ বছর বয়সী সীমা আক্তারকে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাত করে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ৯টার দিকে এই ঘটনায় সাত মাসের গর্ভবতী সীমাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে।
চিকিৎসকরা গর্ভজাত শিশুকে বাঁচাতে সিজারের সিদ্ধান্ত নেন। প্রসব করানো হয় গর্ভের শিশুর। কিন্তু দেখা যায় মায়ের গর্ভে থাকার সময় তার বুকে ছুরির আঘাত লেগেছিল।
চিকিৎসকরা শিশুটিকে অন্য হাসপাতালের আইসিইউতে নিতে বলে। সীমার পরিবারের লোকজন নবজাত শিশুটি নিয়ে অন্য হাসপাতালে যেতে যেতেই মারা যায় ছেলেসন্তানটি। আর মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বুধবার বিকালে সীমা আক্তারও মারা যান।
পরিবার নিয়ে সীমা আক্তার যাত্রাবাড়ীর শহিদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনের একটি বাসায় থাকতেন। সীমার স্বামী জুয়েল পেশায় ফল বিক্রেতা। আবির নামে এই দম্পতির একটি চার বছর বয়সী পুত্রসন্তান রয়েছে।
নিহত সীমার ভাই মো. নাসির জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া নয়টার দিতে এক যুবক ছুরি হাতে সীমাদের বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। সেসময় সীমা ও তার চার বছরের সন্তান বাসায় ছিল।
‘ওই যুবক কিছু না বলেই ছুরি নিয়ে সীমার দিকে তেড়ে যায়। তখন সীমা বলে আমাকে মারবেন না, আমার পেটে সন্তান আছে। সীমার কথা কর্ণপাত না করেই পেটে ছুরিকাঘাত করে ওই যুবক’— যোগ করেন সীমার ভাই।
ছুরিকাঘাতের পরপরই অজ্ঞাত ওই যুবক পালিয়ে যায় জানিয়ে নাসির বলেন, ‘আমার বোন সীমাও ওই যুবককে চিনতে পারেনি।
নিহত সীমা তার স্বামী জুয়েলের সঙ্গে শহীদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে আমাদের বাসার কাছাকাছি ভাড়া থাকে। সীমার আবির (৪) নামে আরও একটি সন্তান রয়েছে।
সীমার স্বামী মো. জুয়েল বলেন, তাদের কোনো কোনো শত্রু নাই। কেন তার স্ত্রী-সন্তানকে ছুরিকাঘাতে মারা হলো তিনি বুঝতে পারছেন না।
জুয়েল বলেন, ‘আমার স্ত্রী বারবার বলেছে তার পেটে বাচ্চা আছে, তাকে না মারতে। তবুও আমার স্ত্রীকে ছাড়ে নাই। আমি এর বিচার চাই।
সীমা ও তার নবজাত শিশু দুজনেই মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া।