ঢাকা অফিস: রবিবার সচিবালয়ে শিক্ষার্থী ও আনসারদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরে শিক্ষার্থী ও পুলিশ আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবাহিনী।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রবিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মোতায়েনরত সেনা সদস্যরা ধৈর্য সহকারে এনগেজমেন্ট করার পরও সেখানকার আন্দোলনরত উত্তেজিত আনসারদের নিবৃত্ত করা যায়নি। পরবর্তীতে আকাশের দিকে সেনাবাহিনীর ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়া এবং ওই এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।
আইএসপিআর জানায়, “রবিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েনরত সেনা সদস্যরা বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এবং সচিবালয়ের সব গেটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। এদিন বিভিন্ন সময়ে আনুমানিক ১০ হাজার আনসার সদস্য একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৭ জন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এদিন (রবিবার) বিকালে উত্তেজিত সদস্যদের শান্ত করার জন্য আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক সচিবালয়ে আগমন করেন এবং আনসার সদস্যদের সব দাবি মেনে নেন। এরপরও উত্তেজিত আনসার সদস্যরা সচিবালয় এলাকা ত্যাগ না করে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ের তিন নম্বর গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।”
আইএসপিআর বলেছে, “এ সময় উত্তেজিত আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহলের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠি দ্বারা আঘাত করে। এতে ৬ জন সেনাসদস্য আহত হন এবং এর মধ্যে ১ জনের অবস্থা গুরুতর। এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মোতায়েনরত সেনাসদস্যরা বারবার ধৈর্য সহকারে আনসার সদস্যদের সঙ্গে এনগেজমেন্ট করা সত্ত্বেও উত্তেজিত আনসাররা নিবৃত্ত না হলে আকাশের দিকে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এরপর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাত উপদেষ্টা, ডিজি আনসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় এলাকা নিরাপদে ত্যাগ করেন। মোতায়নরত সেনাসদস্যরা সচিবালয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং পরবর্তীতে জীবন রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় প্রাথর্নাকারী কিছু সংখ্যক আনসার সদস্যকে নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।