সচিবালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সেনাবাহিনী

ঢাকা অফিস: সচিবালয়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সেনাবাহিনী। রাতে সাড়ে দশটার দিকে সেনা সদস্যরা সচিবালয় এলাকা ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি ধীর ধীরে নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হন।

রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আনসার সদস্যরা ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। শিক্ষার্থী ও পুলিশের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে তারা সচিবালয় এলাকা ছাড়েন। এমনকি আটকে পড়া আনসারদের নিরাপদে সরিয়ে নেন শিক্ষার্থীরা।

আনসার সদস্যরা সচিবালয় ঘেরাওয়ের পর শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিত হন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের অনেকে সচিবালয়ে আসেন। পরে সচিবালয়ে শিক্ষার্থী ও আনসারদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। পরে শিক্ষার্থী ও পুলিশ আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনী।

অবরুদ্ধ সচিবালয়ে কিছু আনসার সদস্যও ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়েন। পড়ে তাদের নিরাপত্তা প্রহরা দিয়ে সচিবালয় এলাকা থেকে বের করেন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে আহতদের রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

রবিবার রাতে আনসার সদস্যরা সচিবালয় ঘেরাও করে। যদিও বিকালেই তাদের দাবিতে রেস্ট প্রথা বাতিলের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। একই তাদের অন্যান্য দাবিও বিবেচনা করার কথা জানিয়ে সুপারিশ কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

সেসময় তারা (আনসার) আন্দোলন প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দেন। কিন্তু রাতে হঠাৎ করেই তারা সচিবালয় ঘেরাও করেন। এতে সচিবালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন সরকারের একজন উপদেষ্টা এবং আনসারদের দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক।

রবিবার রাত ৯টার পর সচিবালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে আনসার সদস্যরা পিছু হটে। তাৎক্ষণিকভাবে হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে জানান, ‘সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে পেটাচ্ছে।’

সারজিস আলম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার ভাইদের রক্তাক্ত করেছে৷ যে যেখানে আছেন, সবাই আসেন ৷ বিন্দুমাত্র ছাড় নয়৷ এদের বিষদাঁত উপরে ফেলতে হবে।’

রাত সোয়া ১০টার দিকে আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার জানান, ‘অনেক শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেলে আহত অবস্থায় আছেন।’

এদিকে রাতেই সচিবালয় এলাকায় গেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ‘এটা একটা বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ মনে হচ্ছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আজ ঐক্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা আনসারদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নেবো বলে আশ্বাস দিয়েছিলাম। এর জন্য আমরা সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু এরপরেও তারা সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা অবরুদ্ধ করে রাখে।