নারায়ণগঞ্জে মাছ ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ আসামি হলো যারা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মো. মিলন নামে এক মাছ ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে।

রোববার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহত মিলনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ হত্যা মামলাটি করেছেন।

মামলায় আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমান ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও অনেককে।

মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান ও নাররায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নিজাম প্রমুখ। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে বাদী শাহনাজ বেগম উল্লেখ করেন, গত ২১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের সমর্থিত নেতা–কর্মীরা একজোট হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, শটগান, ককটেল, লাঠিসোঁটাসহ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে এবং জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খান ছাত্র-জনতার উদ্দেশে এলোপাতাড়ি গুলি ও আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। আসামিরা রাস্তায় অবস্থানরত ছাত্র-জনতার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতির সৃষ্টি করে তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও মারধর করেন। ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে মিলন মাছের আড়ত থেকে বাড়ি ফেরার পথে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে, গত শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও শামীম ওসমানসহ ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায়। বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জে আবুল হাসান (২০) নামের এক তরুণকে হত্যার অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়। নিহত আবুল হাসানের বড় ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে ওই হত্যা মামলাটি করেন।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ, সাবেক জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, তার ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিম প্রমুখ। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে দেড় শতাধিক লোককে।