রংপুর প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে আব্দুল্লাহ আল তাহির নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারে থাকা বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, পুলিশ কর্মকর্তা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার সকালে রংপুরের কোতয়ালী মেট্রো থানার কগনিজেন্স আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত আব্দুল্লাহ আল তাহিরের বাবা আব্দুর রহমান। আদালতের বিচারক আহসানুল হক রানা মামলাটি আমলে নিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহত আব্দুল্লাহ আল তাহিরের বাবা আব্দুর রহমান মামলা দায়েরের বিষটি নিশ্চিত করে আদালতে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, গত ১৯ জুলাই রংপুর নগরীর সিটি বাজার এলাকার রাজা রামমোহন মার্কেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আব্দুল্লাহ আল তাহির।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
অন্য আসামিরা হলেন- ১. সাবেক সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ২. সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ৩. সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ৪. সাবেক পরাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ৫. সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, ৬. রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, ৭. সাবেক পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, ৮. অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাল, ৯. এডিসি ক্রাইম উৎপল কুমার রায়, ১০. এডিসি নুর ইসলাম পাটোয়ারী, ১১. কোতয়ালী থানার ইনচার্জ মোন্তাসির বিল্লাহ, ১২. মহানগর আওয়ামী লীগের আহবায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন, ১৩. যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাশেম, ১৪. জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুল, ১৫. যুগ্ম আহবায়ক মাজেদ আলী বাবুল, ১৬. আইনজীবী সমিতি রংপুরের সভাপতি আব্দুল মালেক, ১৭. সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামাণিক, ১৮. রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, ১৯. সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, ২০. সাবেক সংরক্ষিত আসনের এমপি নাছিমা জামান ববি, ২১. রংপুর সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ২২. ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল আলম, ২৩. ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম তোতা, ২৪. ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইঞ্জিনিয়ার শাহাদৎ হোসেন, ২৫. ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাজাদা আরমান, ২৭. ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কানা হারুন, ২৮. সাবেক কাউন্সিলর ইদ্রিস আলী, ২৮. মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন, ৩০. জেলা যুবলীগের সভাপতি লক্ষিণ চন্দ্র দাস, ৩১. জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি, ৩২. জেলা যুবলীগের কর্মী ডিজেল আহমেদ, ৩৩. ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সনু, ৩৪. স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য মানিক, ৩৫. মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি শাহজানুর রহমান সৌরভ, ৩৬. সাধারণ সম্পাদক রিপন বাবু, ৩৭. জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির হোসেন, ৩৮. সাধারণ সম্পাদক তনিম আহসান চপল, ৩৯. মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ, ৪০. স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য মামুন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত আব্দুল্লাহ আল তাহির বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস ঢাকার ৮ম পর্বের শিক্ষার্থী। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকালে আব্দুল্লাহ আল তাহির আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এর পর বিকাল সাড়ে ৩ টায় রংপুর নগরীর সিটি বাজার এলাকার রাজা রামমোহন মার্কেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।