যশোরে জাবির ইন্টারন্যাশনাল আগুনে ভস্মীভূত ইন্দোনেশিয়ান নাগরিকসহ ১৮ জন নিহত 

যশোর প্রতিনিধি 
যশোরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক ইন্দোনেশিয়ান নাগরিকসহ ১৮ জন নিহত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এ এম মামুন।
প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রচার হওয়ার পর পরই হাজার হাজার ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে বিজয় উল্লাস ও মিছিল করে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। উল্লাসরত জনতার একটি অংশ শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শেখ রাসেলের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচতারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনাল, তাঁর বাড়ি ও প্রেসে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রথম দিকে হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে কোনো উদ্ধার কার্যক্রম চালান যায়নি। ঘন্টাখানেক পর একটি হেলিকপ্টার দিয়ে বেশ কিছু আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করা হয়। পরে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ১৬ তলাবিশিষ্ট হোটেলটির বিভিন্ন ফ্লোর থেকে একের পর এক মরদেহ উদ্ধার হতে থাকে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর শুরু করে। দ্বিতীয় দফায় ৪টার দিকে তারা অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় হোটেলের নিচ থেকে ১২, ১৩ ও ১৪ তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে যান। এ সময় হোটেলে আটকাপড়া কয়েকজন ১৪ তলার বারান্দায় গিয়ে উদ্ধারের জন্য হাত নেড়ে আকুতি জানান।
উদ্ধারকারী একটি হেলিকপ্টার হোটেলের ছাদে ল্যান্ড করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় আটকে পড়া এক ব্যক্তি ছাদে গিয়ে দাঁড়ালে হেলিকপ্টার তাকে উদ্ধার করে।
এদিকে, শাহীন চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও শহরের কাজী পাড়া কাঠালতলাস্থ বাসভবন, কাজীপাড়াতে যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসা, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, শেখ রাসেলের ভাস্কর্য্যসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খান সংবাদ সম্মেলনে জাবের হোটেলে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ছাত্রদের মিছিল হোটেল জাবেরের কাছে যাওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা হোটেলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। হামলা অগ্নিসংযোগে যারা জড়িত তদন্তসাপেক্ষে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।