কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া শহরের একটি ছাত্রীনিবাস থেকে তাসনিভু আক্তার জেমি (১৮) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৪ জুলাই) ভোরের দিকে কালিশংকরপুরের ছাত্রীনিবাস থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জেমি।
জানা গেছে জেমি মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দধাম গ্রামের জাহিদুর রহমানের মেয়ে। সে কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা মসজিদের সামনে নাসিমা খাতুনের বাড়ির চারতলায় ছাত্রী মেসে প্রায় দেড় বছর ধরে থাকতো।
জেমি কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। সে একাই এক রুমে থাকতো। খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছিল৷ সে সরকারি ও বেসরকারি মেধা বৃত্তি পেতো।
ছাত্রীনিবাসের মালিক ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৩ জুলাই) রাত ৩টার দিকে জেমির রুম থেকে চিৎকার শুনতে পায় মেসের ছাত্রীরা। তার রুমের দরজা বন্ধ ছিল। এরপর তার আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি বাড়ির মালিক ও ওই ছাত্রীর বাবাকে জানানো হয়। দরজা বন্ধ থাকায় মেসের ছাত্রীরা ও বাড়ির মালিক তার দরজায় নক করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। রোববার ভোরের দিকে ঘরের দরজা ভেঙে দেখা যায় জেমি ফ্যান ঝুলানোর রডের সাথে ঝুলছে। তারা ঝুলন্ত জেমির দেহ নামান এবং হাসপাতালে নিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার কয়েকজন বান্ধবী ও ওই মেসের ছাত্রীরা বলেন, জেমি খুব ভালো মানুষ ছিল। প্রচুর পড়াশোনা করতো। ভালো ছাত্রী ছিল। তার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় কয়েকদিন ধরে খুব মন খারাপ করতো। সে অনেক ভেঙে পড়েছিল। পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় জন্যও আত্মহত্যা করতে পারে।
নিহতের বাবা জাহিদুর রহমান বলেন, আমার মেয়ে খুব ভালো। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা জানি না। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। মেয়েটাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আমরা সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে, কী কারণে আত্মহত্যা করেছে তা জানা যায়নি।