জিআই স্বীকৃতি পেল কুষ্টিয়ার তিলের খাজা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: তিলের খাজা পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। মুখরোচক খাবারটি যে কুষ্টিয়ায় তৈরি, তাও সবার জানা। দেশের অন্য এলাকাতে সামান্য কিছু তৈরি হলেও বিক্রির সময় তা কুষ্টিয়ার বলেই ক্রেতাদের আশ্বস্ত করা হয়। সম্প্রতি খাবারটি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে।

শতাধিক বছর ধরে সমাদৃত পণ্যটি কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী উপজেলায় তেলি সম্প্রদায়ের হাতে প্রথম তৈরি হয় বলে জানা যায়। ঠিক কবে উৎপাদন শুরু হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে ইতিহাস অনুসারে, তিল থেকে তেল তৈরি করতে তেলিদের কুষ্টিয়ায় এনেছিলেন ব্রিটিশরা। আর তেলি সম্প্রদায়ের মাধ্যমে এই খাবার প্রথম কুষ্টিয়ায় তৈরি হয়। ১৯৭০-এর দশকে কুষ্টিয়া শহরের চর মিলপাড়ায় কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠে। এরপর ক্রমেই কুষ্টিয়ার তিলের খাজার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্য অঞ্চলেও।

কারিগরেরা জানান, সাধারণত তিলের খাজা তৈরির প্রধান উপকরণ তিল ও চিনি। প্রতি কড়াইয়ে ৭ কেজি চিনি, পানি মেশানো দুধ আধা লিটার, পানি ৪ লিটার, দেড় কেজি তিল আর প্রয়োজনমতো এলাচ দেওয়া হয়। পরে বড় চুলায় জাল দিয়ে তৈরি হয় সিরা। সেই সিরা আঠালো হয়ে জমতে থাকলে বিশেষ কায়দায় টেনে বড় করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট মাপে কেটে তাতে মেশানো হয় খোসা ছাড়ানো তিল। এক কড়াইয়ে প্রায় ৮ কেজি খাজা হয়।

কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা বছরই তৈরি করা হয় এটি। তবে শীত মৌসুমে এর কদর বাড়ে। কুষ্টিয়ায় বর্তমানে দুটি কারখানা আছে। এর মধ্যে জয়নাবাদ এলাকায় রয়েছে ১ নম্বর নিউ স্পেশাল ভাই ভাই তিলের খাজা এবং মিলপাড়ায় রয়েছে ভাই ভাই তিলের খাজা। মূলত আর্থিক কারণেই এ শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা বলেন, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা শিল্পের বিকাশে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব। ক্ষুদ্র এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ঋণের ব্যবস্থাও করবে জেলা প্রশাসন।