ঢাকা অফিস: নির্বাচন নিয়ে যারা বড় খেলা খেলতে চেয়েছিল তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় আজ গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যারা বড় খেলা খেলতে চেয়েছিল তারা তাতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমাদের কোনো মাস্টার নেই। বাংলাদেশের জনগণই আমাদের মাস্টার।’
নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ। যে পরাজিত হয়েছে, বা যে বিজয়ী হয়েছে এটা নিয়ে কোনো দ্বন্দ্বে জড়ানো যাবে না। সবাই মিলেমিশে থাকতে হবে। কারো সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বে জড়ানো যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নৌকা অনেককে দিয়েছিলাম। অনেকে নির্বাচিত হননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অনেকে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই জনগণ ভোট দিয়েছে। তাই কোনো দ্বন্দ্ব সংঘাত আমি দেখতে চাই না। এ কথাটা নেতাকর্মীদের যেন মনে থাকে। আমরা কিছু করলে চক্রান্তকারীরা সুযোগ নেবে। আমরা সেটি হতে দিতে পারি না।’
তিনি নির্বাচিত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘যারা নির্বাচিত হননি আগামীতে হবেন। তিনি যে দলেরই হোক।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য অনেকেই এসেছে, ধ্বংস করার জন্য বারবার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু পারেনি। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এখন দেশের মধ্যে আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে। কীভাবে আগুন দিয়ে মানুষকে পোড়ানো হলো আপনারা তা দেখেছেন। যাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব আছে তারা এসব কখনো করতে পারে না। মানুষকে হত্যা করে তারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের কিছু মুরুব্বি আছে, তারাও পরামর্শ দিয়েছে। এই মুরুব্বিদের পরামর্শ নিলে বাংলাদেশে আর চলা লাগবে না।
কিছু দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও কিছুই আসে যায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তো নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এটাই বড় কথা। দেশের মানুষ এই নির্বাচনে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সবাই অংশ নিয়েছে। যারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি তাদের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছে৷ আমি বলব তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন প্রমাণ করেছে বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখা যায় না। বঙ্গবন্ধু পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন বাঙালি জাতিকে দাবায়ে রাখা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। ১২০ বছর বয়সী বুড়ো মানুষও ভোট দিতে গেছেন। আমি নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন জানাই। তারা অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল শপথ নেবেন নির্বাচিতরা। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হবেন। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেবেন। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিলেই সরকার গঠন করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তেমনি খালেদা জিয়াও করেছে। এখন তারেক জিয়া করছে। বিএনপি ১৩-১৪ সালে মানুষ হত্যা করেছে। গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ হত্যা করেছে। পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে হবে। দেশের মানুষকে হাত পেতে চলতে হবে না। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষায় জাতি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।