যশোর প্রতিনিধি: সারাদেশের মতো যশোরেও অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। বস্তা প্রতি ৫০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে চালের দাম। ব্যবাসায়ীরা বলছেন ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে গত সপ্তাহ খানেক ধরে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে চাল কিনতে হিমশিম খেতে মধ্যেবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের।
সরজমিনের যশোরের বড় বাজার চাউলের পাইকারী বাজার ঘুরে জানা গেছে, কাজল লতা চাউল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৪ টাকা, আগে ছিল ৫২ টাকা, মিনিকেট চাউল ৫৬ টাকা, আগে ছিল ৫৪ টাকা, স্বর্ণলতা চাউল ৫০ টাকা, আগে ছিল ৪৮ টাকা, বাসমতি চাউল ৬৮ টাকা, আগে ছিল ৬৬ টাকা। প্রতি ২৫ কেজির চাউলের বস্তায় দাম বেড়েছে ৫০ টাকা করে।
বড়বাজারে চাউলের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়ে সবধরনের চাউলের দাম। আমাদের আড়ৎ ব্যবসায়ীরা বলছে ধানের দাম বাড়ার কারণে চাউলের দাম বেড়েছে।
তাপস কুমার কুন্ডু নামে আরেক চাল ব্যবসায়ী বলেন, আড়ৎদাররা দাম বাড়িয়ে আমাদের কাছে বিক্রি করে এজন্য আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি। তারা বলছে পোকায় ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ার কারণে ধানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, এজন্য চাউলের দামও বেড়েছে।
শহরের বেজপাড়া থেকে এ বড়বাজারে চাল কিনতে আসেন দিনমজুর ইব্রাহিম হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘শাক-সবজির দাম বাড়লে দুইদিন ডাল ভাত খেয়ে থাকা যায়, কিন্তু চাউলের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে কোন এক সময় ভাত না খেয়ে থাকতে হবে।’
শহরের চুয়াডাঙ্গা বাস্টান্ডের এক দোকান থেকে চাল কিনে ফিরছিলেন মনোয়ারা নানে এক পরিছন্ন কর্মী। তিনি বলেন, আমরা দিন এনে দিন খাই, দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি পেলে আমরা হাড়ে হাড়ে এর যন্ত্রণা টের পাই। তিনি বলেন ‘অনেকবার পেপারে, সাংবাদিকদের লেখালেখি করতে দেখেছি, কিন্তু দিন শেষে কিছুই হয় না।’
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, পোকার আক্রমণ হলেও তেমন ক্ষতি হয়নি, সকল ধরণের ধানের আশানরুপ ফলন হয়েছে। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (শস্য) সমরেন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বছর যশোর জেলায় এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মতে আমন ধানের ফলন হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে। সব মিলিয়ে সব প্রকার ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
ধানের দাম বৃ্দ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হয়ে থাকে। এখন আমন ধান উঠছে, হয়তো সামনে ধানের দাম স্থিতিশীল হবে।
এদিকে এ অঞ্চলের ধান ভাঙিয়ে চাল তৈরি করে যশোরের চৌগাছার সলুয়া বাজার ও সদরের চুড়ামনকাঠি এলাকার আড়ৎদাররা। তার বলছেন চাউলের দাম বাড়েনি, পূর্বের দামে বিক্রি হচ্ছে। যশোর চুড়ামনকাঠি এলাকার বৃহৎ আড়ৎদার কামাল হোসেন বলেন, ইরি ধান উঠলে আমরা চাউল বিক্রি করেছি বস্তা ১৩শ’৫০ টাকা। এখনও একই দামে বিক্রি করছি। তবে মাঝে চার টাকা দাম কমেছিল, সেটি এখন বেড়েছে, এজন্য পাবলিক দাম বেড়েছে বলে দাবি করছে।
যশোর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনীম বলেন, আমরা বাজার তদারকি করছি। গত এক সপ্তাহে আমরা অনেক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। মূলত আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে সেভাবে আমরা বাজার মনিটরিং করছি।
তিনি বলেন, ধানের দাম বেড়েছে কি না, আর এ কারণে চাউলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে