কেশবপুরের আলোচিত কাউন্সিলর বাবু সাতক্ষীরায় আটক, জনমনে স্বস্তি

কেশবপুর প্রতিনিধি: কেশবপুর পৌরসভার ৪ নং আলতাপোল ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একাধিক মামলার আসামী বিএনপি নেতা আফজাল হোসেন বাবুকে আটক করেছে র‌্যাব। সোমবার গভীর রাতে সাতক্ষীরা শহরের এক আত্মীয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে র‌্যাব সদস্যরা আলোচিত এ কাউন্সিলরকে আটক করে মঙ্গলবার সকালে কেশবপুর থানায় হস্তান্তর করেন। পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলোচিত এ নেতা আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দূর্দান্ত প্রতাপের সাথে চলাফেরা ও কাজকর্র্ম করে সবসময় সমালোচিত ছিলেন। বিএনপি মতাদর্শের সাথে জড়িত থাকলেও আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তার দূর্বৃত্তায়ন থেমে নেই।
থানা সুত্র জানায়, বিএনপির ডাকা অবরোধের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচলে বাধা,রাষ্ঠ্রীয় সম্পদের ক্ষতি, ব্যবসায়ীসহ জনমনে আতংক ও ভীতিপ্রদর্শনের চেষ্টার খবর পেয়ে কেশবপুর থানা পুলিশ তাদের নিবৃত করতে আলতাপোল এলাকায় গেলে ইট পাটকেল ও ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় বিএনপি নেতারা। এঘটনায় কেশবপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। যার নং-০১, তাং-০১-১১-২৩। এ মামলার এজহারনামীয় ৪ নং আসামী আফজাল হোসেন বাবু। এই মামলায় বাবু পলাতক ছিলেন। সোমবার গভীররাতে গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে জমি দখল, বাড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়া, ভাঙচুর, মারপিট, চাঁদাবাজি ও নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তার গ্রেফতারের খবর পেয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মী জানিয়েছেন, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর বাবু উসৃঙ্খল ছেলেদের নিয়ে বাহিনী গড়ে তোলেন। নতুন বাড়ি নির্মান করতে গেলে চাঁদা , জমি ক্রয় করলে চাঁদা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করতে গেলে চাঁদা, পরিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে চাঁদাসহ বিভিন্ন কৌশলে সে কোটি কোটি টাকার চাঁদা আদায় করছে। তার অত্যাচারে অনেকেই ৪ নং ওয়ার্ডে জমি কিনতে ভয় পান। কাউন্সিলর বাবুর চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ভয়ে অনেকে মুখ না খুললেও সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে চাঁদাবাজির ভয়াবহতা। চাঁদার টাকা না দিলে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়।
তথ্যানুসন্ধান ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, পৌর শহরের মধুসড়কে আব্দুর করিম নিজ জমিতে বিল্ডিং নির্মান করতে গেলে তার কাছে লক্ষধিক টাকা চাঁদা দাবি করেন বাবু। আলতাপোল এলাকায় মেহেদি বিশ্বাসের জমি দখল, গরুহাটার পাশে আব্দুল মজিদ বড় ভাইয়ের ক্রয়কৃত জমি সীমানা দিতে গেলে তার কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি,মধুসড়কের শিউলি গার্মেন্টেসের মালিক নূর ইসলামের জমি সংক্রান্ত বিরোধে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায়, পল্লী বিদ্যুৎ সাবষ্টিশনের সামনে হাবিবুর রহমান ও খোকনের জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে হাবিবুর রহমানের নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। মধুসড়কের অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য শওকত হোসেনের প্লান ছাড়া ৫ তলা বিল্ডিং নির্মানে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়য়সহ জমির বিরোধে শেখ মুনছুর আলীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আসামী একে আজাদ ইকতিয়ারের নিকট থেকে ভয়ভীতি দেকিয়ে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করেন কাউন্সিলর আফজাল হোসেন বাবু। এছাড়াও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্নাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে বাবু। এসব ঘটনায় ভয়ে অনেকেই মামলা না করলেও নাশকতাসহ তার বিরুদ্ধে কেশবপুর ও যশোর থানায় ৫ টি মামলা রয়েছে। গরু হাটের ইজারা নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির সাথে তার কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল করেও তিনি আলোচিত হন। কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মফিজুর রহমান বলেন, নাশকতায় একটি মামলায় কাউন্সিলর আফজাল হোসেন বাবুকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।