যশোরের চৌগাছায় এক কলেজছাত্রী গনধর্ষণের অভিযোগ এক ধর্ষক গ্রেফতার 

যশোর প্রতিনিধি 
যশোরের চৌগাছায় এক কলেজছাত্রী (১৭) গনধর্ষণের শিকার হয়েছে। গন ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ওই শিক্ষার্থীকে ব্যাপক মারপিট করে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় সুশান্ত দাসকে (১৯) নামে এক ধর্ষককে
গ্রেফতারের পর ঝিনাইদহের মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে চৌগাছা থানা পুলিশ। ধর্ষণের আলামতও জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চৌগাছার পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের মহেশখালী গ্রামে কাটগড়া বাওড়ের পাশে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। দুপুর দুইটার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন ও পরিবার উদ্ধার করে স্থানীয় একজন চিকিৎসকের কাছে নেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনা জানতে পারায় যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় বিকাল চারটার দিকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থী মহেশপুরের কাটগড়া ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী এবং গ্রেফতার ধর্ষক সুশান্ত একই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ধর্ষণের শিকার হওয়া শিক্ষার্থী চৌগাছার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং ধর্ষক সুশান্ত দাস একই গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছা হাসপাতালে মেয়েটিকে নিয়ে আসার পর মেয়েটির জ্ঞান ফেরে। এসময় সে ব্যাপক ছটফট করছিলো। পরে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার লুৎফুন্নেছা লতা একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন নার্স ও মেয়েটির চাচিকে সাথে রেখে পরীক্ষা করেন। সেখানে মেয়েটি তাকে চারজন মিলে ধর্ষণ করেছে বলে চিকিৎসকদের জানায়।
এ বিষয়ে চিকিৎসক লুৎফুন্নেছা লতা জানান, গন ধর্ষণ হলে যতটুকু ক্ষত হয় সে ধরনের ক্ষতচিহ্ন তারা পাননি, তবে ক্ষত আছে।
তিনি বলেন, মেয়েটিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে রেফার্ড করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণ হয়েছে কিনা সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে। তবে তাকে গন ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে এটা নিশ্চিত। মেয়েটি খুবই ট্রমা আক্রান্ত।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আল ইমরান বলেন, মেয়েটির কাছে শুনতে চাইলে সে সংঘবদ্ধ ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে বলে মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়েছে। তবে সে চিৎকার ও ছটফট করা ছাড়া চিকিৎসকদের কোনো কথারই উত্তর দেয়নি।
এদিকে ধর্ষণের পর ওই শিক্ষার্থীকে স্থানীয় কিছু যুবক ব্যাপক মারপিট করে। মারপিটে সে মারাত্মক আহত হয়।
হাসপাতালে পরীক্ষা করে জানা গেছে, মেয়েটির বুকে, তলপেটেসহ বিভিন্ন জায়গায় দুর্বৃত্তরা লাথি, কিল-ঘুসি মেরে আহত করেছে।
হাসপাতালে উপস্থিত থাকা চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) জেল্লাল হোসেন মেয়েটিকে শারীরিকভাবে আহত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, মেয়েটির হাতে, গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ফোলা জখম করা হয়েছে।
সুখপুকুরিয়া ইউপির পুড়াপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। উদ্ধার করার সময় মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু যুবক মেয়েটি এবং সুশান্তকে আটক করে রেখেছিলো। ওই এলাকাটা আমাদের সীমানার মধ্যে নয়। তবুও আমাদের ইউনিয়নের ছেলে-মেয়ে হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে সেখানে গিয়ে  উদ্ধার করি।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল পার্শ্ববর্তী মহেশপুর থানার অধীনে হওয়ায় ধর্ষক সুশান্ত দাসকে গ্রেফতার করে মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মহেশপুর থানা পুলিশ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।