এবার আকাশে গুলি ফুটিয়ে আলোচনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার শামীম !!

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি:
প্রবাদে আছে,“কয়লা ধূলে ময়লা যায় না”। কথাটি আবারো সত্য প্রমানিত করলো যশোর জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও পেশাদার খুনি শামীম কবির ওরফে কিলার শামীম। বৃহস্পতিবার রাতে যশোরের চৌগাছা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে ৩ রাউন্ড গুলি ফুটিয়ে আবারো ত্রাস সৃষ্টি করে আলোচনায় এসেছে।
শামীম কবির ওরফে কিলার শামীম আলোচিত যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুুর রহমান মিন্টু, শিশু সৌরভসহ ৬টি হত্যা মামলাসহ ১৭ টি মামলা এবং একটি অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সাজা প্রাপ্ত দাগী আসামি । জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তালিকাভূক্ত শীর্ষ এ সন্ত্রাসী সাড়ে ৩ বছরে আগে আদালতে আতœসমর্পণ করে। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে নিজ গ্রামেই অবস্থান করছে।
পেশাদার খুনি এই কিলার শামীম উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল হকের ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমানের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম রেজওয়ান হাবিব আলিফ জানান, (বৃহস্পতিবার) রাতে আমাদের জগন্নাথপুর গ্রামের
আজহার ব্যাপারির ছেলে খোকনের বাড়িতে ওরসের দাওয়াত ছিল। আমরা সেখানে খাবার নিয়ে বসেছি এমন সময় (রাত আনুমানিক ১০ বা সাড়ে ১০টার দিকে)দুজন সঙ্গীসহ কিলার শামীম এসে উপস্থিত হন। এসময় তিনি মাতাল অবস্থায় ছিলেন। সেখানে এসেই তিনি চৌগাছা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারন সম্পাদক শামীম রেজাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। আমি তাকে যতোই বুঝাতে চেষ্টা করি ততই তার গালাগাল বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাকে জোর করে সরিয়ে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সে ৩ রাউন্ড গুলি ফুটিয়ে চলে যায়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী জগন্নাথপুর গ্রামের মহাসিন বিশ্বাসের ছেলে সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আনুমানিক রাত ১০টার পরে জাহাঙ্গীরপুরের শামীম ওরফে কিলার শামীম এই ঘটনা ঘটায়। এসময় তার সাথে ওই গ্রামের ইয়াসিনসহ আরো একজন ছিল।
চৌগাছা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেনসহ আরো অনেকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
যাকে খুন করতে এসেছিল কিলার শামীম সেই চৌগাছা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক সাধারন সম্পাদক শামীম রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জন্নাথপুরে খোকনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে বসেছি এমন সময় কিলার শামীম শান্ত আর বাবুল এসে উপস্থিত হয়। সেখানে শামীম কিছুক্ষন পর পর মাজা থেকে পিস্তল বের করে হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা কিলার শামীমকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তখন সে মটর সাইকেলে যাওয়ার সময় ৩ রাউন্ড গুলি ফুটিয়ে চলে যায়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করবেন বলেও জানান তিনি।
রাত ১২টা ২৩ মিনিটে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন,“বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখনি খোজ নিচ্ছি।
উল্লেখ্য ২০১৩ সালে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টুকে প্রকােশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করে এই কিলার শামীম ও তার বাহিনী। ২০২০ সালে ২৪ মে উপজেলার এক যুবলীগ নেতাকে হত্যা করতে গিয়ে গনটপটুনির শিকার হয় কিলার শামীম। এর আগে ২০০৮/২০০৯ সালের দিকে নিজ গ্রামে বাপ মায়ের সামনে এক মেয়েকে ধর্ষন করতে গেলে আত্মরক্ষাতে সেই মেয়ে তার বালিশের পাশে থাকা দা দিয়ে কিলার শামীমের মুখের বাম পাশে কোপ মারে। সেই কোপের চিহ্ন এখনো তার মুখে বিদ্যমান। কিছুদিন আগে এই সন্ত্রাসীর লালসা থেকে বাচতে একজন কাঠ মিস্ত্রী তার মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে জাহাঙ্গীরপুর গ্রাম থেকে পালিয়েছে। তার আগে এক হিন্দু গৃহবধুকে নিজের লালসার শিকার বানাতে ব্যার্থ হয়ে তার বাড়ির সামনে একইভাবে গুলি ফুটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল এই খুনি।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সে প্রকাশ্যে গুলি ফুটিয়ে ত্রাসের রাম রাজস্ব কায়েম করেও বহাল তবিয়তে থাকছেন গ্রামের নিজ বাড়িতে। পুলিশ,ডিবি র‌্যাবের এতো তৎপরতার মধ্যেও একের পর এক ঘটনা ঘটিয়েও কিভাবে ধরাছোয়ার বাইরে থাকছে এই পেশাদার খুনি ?? কেনো আজও উদ্ধার হয়নি কিলার শামীমের অবৈধ অস্ত্র ভান্ডার?? প্রশ্নটি ঘুরে ফিরছে সকলের মনে।
সেই সাথে কখন যে কোন মায়ের বুক খালি হয় সেই আতঙ্কেই দিন কাটছে উপজেলাবাসির।