নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরা থানা পুলিশের হেফাজতে সুজন মিয়া (৩৫) নামে রিমান্ডে থাকা এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯ নভেম্বর) সকালে রায়পুরা থানার হাজতখানার বাথরমে গলায় শার্ট পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানায় রায়পুরা থানা পুলিশ।
নিহত সুজন মিয়া রায়পুরা উপজেলার মাহমুদপুর এলাকার মুজিবর রহমানের ছেলে এবং নিজ স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি।
গত শনিবার (৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে স্ত্রী লাভলী বেগমের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে সুজন মিয়া ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রী লাভলীকে পেটে আঘাত করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা মালেকা বেগম নিজে বাদী হয়ে সুজনকে প্রধান আসামী করে রায়পুরা থানায় মামলা করলে সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকালে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার আটরশি দরবার শরীফের পাশ থেকে নরসিংদী জেলা পুলিশের একটি টিম আসামি সুজন মিয়াকে গ্রেফতার করে।
পরে তাকে জিঞ্জাসাবাদে সে প্রাথমিকভাবে অপরাধের বিষয়ে স্বীকার করে পুলিশের কাছে। পরে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে তাকে আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। পরে ওইদিন রাতে রিমান্ডের উদ্দেশ্যে রায়পুরা থানায় ঢুকানো হয় এবং সকালে থানা হাজতে খাবার দিতে গেলে বাথরুমের জানালার সাথে থাকা একটি রড়ের সাথে শার্ট পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে রায়পুরা থানা পুলিশের দেওয়া একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহতের লাশ সুরতহাল করা হয় এবং নরসিংদী জেলা পুলিশ কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুসন্ধানের কমিটি গঠন করা হয় বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর বলছে, আজ সকাল সাড়ে দশটায় পুলিশের একজন কয়েদি আমাদের এখানে স্পটডেট হয়ে আসে। পরে আমরা ইসিজি সহ নানা পরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত হই যে তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। কিভাবে ঘটনা ঘটছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
অন্য দিকে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে দাবি পুলিশের। বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন সাংবাদিকদের জানান, সকাল পৌনে ১০ টার দিকে রায়পুরা থানা হাজতের ওয়াশরমে পরনের শার্ট খুলে আত্মহত্যা করে। বিস্তারিত অনুসন্ধানে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে।