সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে হাসপাতালের সামনের সড়ক বন্ধ করে অবরোধ করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা ধর্মঘট ডেকে জরুরি সেবা ছাড়া সকল চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে রেখেছেন। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। বর্তমানে হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার রাত পৌণে ২টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত নিজ অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ রয়েছেন হাসাপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুর রহমান ভূঁইয়া।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, রবিবার হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বজনরা কর্তব্যরত এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর দুর্ব্যবহারকারী দুজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনার জেরে সোমবার রাতে বহিরাগতরা অস্ত্র নিয়ে তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হয়ে একজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)-তে আছেন। অপর দুজনের মধ্যে একজন অর্থোপেডিক্স ও ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
হামলায় আহতরা হলেন- মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রুদ্র নাথ ও নাইমুর রহমান ইমন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। আগে হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ি ছিল এখন নেই। বহিরাগতরা কীভাবে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে নতুবা আমরা সড়ক ছাড়ব না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ৪ ধফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে নতুবা আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী শাহ অসিম ক্যানেডি বলেন, রবিবার এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের সাথে রোগীর দুজন স্বজন খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেই।
তিনি বলেন, এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত ৮টায় কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বহিরাগতরা আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এতে তিনজন আহত হন।
তিনি বলেন, আগেও অনেকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। তাই সোমবার আমরা রাস্তায় নেমেছি। এ ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়ক ছাড়ব না।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহমদ মুন্তাকিম চৌধুরী বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার পর্যন্ত আমরা কাজে যোগ দেব না।
এসএমপির উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ কাজ করছে। এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা হলেন- নগরের মুন্সিপাড়ার মৃত রানা আহমদের পুত্র মো. মাহিদ হাসান রাব্বী (২৭) ও কাজলশাহ এলাকার আব্দুল হান্নানের পুত্র মো. এহসান আহমদ (২২)।
আজবাহার আলী শেখ আরও বলেন, আমরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক অবরোধ থেকে সরিয়ে আনারও চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা হাসপাতালের সব গেট বন্ধ করে রাখায় বর্তমানে হাসপাতালে কোনা রোগী প্রবেশ করতে পারছে না