যশোরে বিএনপির ৪২ নেতাকর্মীর নামে পুলিশের মামলা, গ্রেফতার- ১৭

বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরে জাতীয়বাদী দল ( বিএনপির) ৪২ নেতাকর্মীর নামে ফের মামলা দিয়েছে পুলিশ। যশোর টাউন হল ময়দানে জেলা বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ হওয়ার পরদিন পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ধংসাত্ত্বক মূলক কাজের জন্য বোমার এবং পাথর রাখার অভিযোগে মামলাটি করেছে। মামলায় ১৭ নেতাকর্মীকে আটকও করেছে। তাদের কাছ থেকে ৬টি বোমা ও ৪৯ পিস ছোট সাইজের পাথরও উদ্ধারের দাবি করেছেন মামলার বাদি পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম। মামলাটিকে গায়েবী এবং অদ্ভুতুড়ে বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা। তাদের দাবি পুলিশ আগের মতো যশোরে রাতের আধাঁরে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আটক করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আটককৃত ১৭ জন হচ্ছে, যশোর শহরের পশ্চিমবারান্দী কদমতলা এলাকার হুসাইন আহমেদ, সদর উপজেলার আরবপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নেছার আলী, শহরের শংকরপুর এলাকার জামির হোসেন, খোলাডাঙ্গার জাকির হোসেন, নাজির শংকরপুরের শেখ আবু সাঈদ বিপন, ইছালী গ্রামের আনিসুর রহমান, চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার আব্দুস সালাম, সরদার বাগডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমান হাফিজ, পূর্ব বারান্দীপাড়া ঢাকা রোডের হাবিবুর রহমান, আড়পাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন, দাইতলা গ্রামের কামাল হোসেন, মাসুদ রানা, ফতেপুর গ্রামের কোরবান আলী, বাচ্চু, চাঁচড়া ইসমাইল কলোনীর শাহিন হোসেন, লেবুতলার আব্দুল খালেক এবং বলরামপুর মধ্যপাড়ার হাদিউজ্জামান ওরফে বদরুল । মামলায় পলাতক আসামিরা হচ্ছে, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শহরের আরএন রোড এলাকার রাজিদুর রহমান সাগর, ষষ্টিতলা পাড়ার আরাফাত হোসেন, ডাকাতিয়া গ্রামের শাহিন, বানিয়ালী গ্রামের আব্দুর রশিদ, শাহবাজপুর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন, কেশবপুর উপজেলার রাজননগর বাকাবাশি গ্রামের রেজাউল গাজী, পাঁচরঘাট মনোহরপুর গ্রামের আব্দুল আলীম, সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন, হাটিবিলা গ্রামের আফজাল হোসেন, নরেন্দ্রপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন, ঝুমঝুমপুর বিজিবি ক্যাম্পের পিছনের জাহাঙ্গীর হোসেন, রাজাপুর গ্রামের সবদুল মোল্লা, গাইদগাছি গ্রামের মশিয়ার রহমান, আজীজ কাজী, ইছালীর হাকিমপুর বাজারপাড়া কামরুল ইসলাম, ইছালী পূর্বপাড়ার কামরুজ্জামান মোল্লা, ছাতিয়ানতলা এলাকার শামীম কবির অসিম, আবু তালেব, কোদালিয়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম টুকু, এনায়েতপুর গ্রামে দাউদ মোল্লা, আড়াপাড়া গ্রামের মধু, ছোট শেখহাটি গ্রামের তরিকুল, তালিবাড়িয়া গ্রামের কবির , রাজাপুর গ্রামের হাসান এবং কাশিমপুর গ্রামের তাইজুল ইসলাম। এছাড়া আরো অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে ২৪ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৬টায় শহরের লালদিঘির পূর্বপাড়ে শ্রী হরিসভা মন্দিরের সামনে কিছু যুবক ধ্বংসাত্ত্বক ও রাষ্ট্র এবং সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য জড়ো হয়েছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখতে পায় দুষ্কৃতিকারীরা সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী শ্লোগান দিচ্ছে। সেখান থেকে ১৭জনকে আটক করা হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়। আটককৃতদের কাছ থেকে ৬টি ককটেল ও তিনটি ব্যাগে রাখা ছোট সাইজের ৪৯টি পাথর উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা পলাতক আসামিদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। আসামিরা ধ্বংসাত্ত্বক ও রাষ্ট্র বিরোধী কাজের জন্য সেখানে জড়ো হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এই মামলাটি অদ্ভুতুড়ে ও গায়েবী মামলা বলে দাবি করেছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, পুলিশ ফের বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করেছে। টাউন হল ময়দারে জেলা বিএনপির উদ্যোগে সফল সমাবেশ হওয়ায় সরকার ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে। সে কারণে বৃহস্পতিবার রাতভর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৭জনকে আটক করেছে। তিনি আরো বলেছেন, পুলিশ যে অভিযোগ এনেছে সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। হরিসভা কেন্দ্রের সামনে এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। কেউ জানেনা শ্লোগানের কথা। শুধু পুলিশ জানে। এর আগেও বহু মামলায় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ফাঁসিয়েছে।