যশোরে তালাক দেয়া স্ত্রীকে ধর্ষণ, পুলিশের এসআইে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট

যশোর প্রতিনিধি 
যশোরে আলোচিত পুলিশের উপপরিদর্শক আজিজুলের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশনস) সুমন ভক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযুক্ত আজিজুল হক সবুজ সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার সুরুলিয়া গ্রামের আনোয়ারুল হকের ছেলে। বর্তমানে তিনি যশোর সদর উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামে বসবাস করেন।
তিনি বর্তমানে ঝিনাইদহের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক বাংলাদেশ পুলিশে সাব-ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করেন। ইতিপূর্বে তিনি যশোর সিআইডি পুলিশে কর্মরত ছিলেন। বিভিন্ন অপরাধে তাকে ঢাকার এসপিবিএন এ পোস্টিং করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে যশোর সদর উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করেন। কিন্তু পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রথম স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। আর এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে মামলা করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। যদিও পরবর্তীতে দু’টি সন্তান থাকার কারণে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে আলোচনা করে মামলাটি প্রত্যাহার করিয়ে নেন। ফলে আইনগত জটিলতা ও তথ্যগত ত্রুুটির কারণ দেখানোর ফলে ওই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এরপর আজিজুল একাধিক বিয়ে করেন। সর্বশেষ যশোর শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড হাফেজিয়া মাদ্রাসার পাশে বাদশা মিয়ার মেয়ে জেসমিন বেগমকে ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর চতুর্থ বিয়ে করেন।
কিন্তু ইতিপূর্বেও নানা কারণে আজিজুলকে ঢাকার এসপিবিএন এ পোস্টিং করে কর্তৃপক্ষ। ফলে চতুর্থ স্ত্রী জেসমিন এবং প্রথম স্ত্রীর দুইটি ছেলে-মেয়ে নিয়ে রঘুরামপুর গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। আর চাকরির সুবাদে আজিজ কর্মস্থলে থাকতেন। মাঝে মাঝে যশোরে বাদীর বসত বাড়িতে আসতেন।
জেসমিনের দায়ের করা মামলায় আরো উল্লেখ করেন, ‘আজিজুল ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরায় লাবনী নামে আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করেন। ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জেসমিনকে তালাক প্রদান করেন। তালাক দেয়ার দুই মাস পর অর্থাৎ চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল রাত ১টার দিকে আজিজুল হক তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী জেসমিনের ঘরের দরজায় নক করেন। দরজা খোলামাত্র তিনি ঘরের ভেতর ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। ওই সময় আজিজুল তাকে নানা ধরণের ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে আজিজুল ওয়াশরুমে গেলে তার সাবেক স্ত্রী, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। এরপর কোতয়ালি থানা পুলিশ আজিজুলকে আটক করে। এই ঘটনার পরদিন তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রেকর্ড হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা কেতায়ালি থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশনস) সুমন ভক্ত তদন্ত শেষে আজিজুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে অভিযুক্ত আজিজুল হক বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলায় পোস্টিং হলেও পুলিশ লাইনে ক্লোজ রয়েছেন বলে জানাগেছে।