বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াসা:নির্বাচন বিলম্বের পাঁয়তারা

Share

যশোর অফিস 
দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরের বড় ব্যবসায়িক সংগঠন বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং অ্যাসোসিয়েশানের কার্যকারী পরিষদের মেয়াদ কাল শেষ হলেও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হওয়ায় সংগঠনটির সাধারন সদস্যদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত ৩০ শে মে কার্যকরী পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত আসন্ন নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করেননি বর্তমান পরিষদ।
এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পোস্ট করে অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনটির সদস্যা বনি ট্রেডিং কর্পোরেশন এর সত্তাধিকারী মোছাঃ নাজমা আক্তার। গত ৩ সেপ্টেম্বর-২৫ ইং তারিখে তার ফেসবুক আইডি Nazma Akter হতে পোস্ট লিখে তিনি জানতে চেয়েছেন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যকরী কমিটির মেয়াদ ৩০ মে ২০২৫ তারিখে শেষ। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত ৪৫ দিন আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি কেন।
তথ্যবহুল লেখাতে তিনি আরো লেখেন,কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের সময় পেরিয়েছে ১৫৬ দিন আর ৪৫ দিন পূর্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হওয়ার কথা যা বিলম্ব হয়েছে। এই দুই মিলিয়ে মোট ২০১ দিনের বিলম্ব যা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং অবৈধ অবস্থান বলে তার দাবী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টটি ছড়িয়ে পড়লে সিঅ্যান্ডএফ পাড়ার অন্যান্য সদস্যদের মাঝেও এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। তবে কি সংগঠনটির কার্যকরী পরিষদ গঠন নিয়ে কোন জটলা তৈরী হয়েছে। অথবা নির্বাচনকে বানচাল করে পদ আঁকড়ে থাকতে চাচ্ছেন বর্তমান পরিষদ নেতৃবৃন্দ এমন প্রশ্ন?এখন জনমনে।
এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, হজ্বও ঈদ সহ সভাপতির অসুস্থতার কারনে নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করতে পারিনি। তবে এজিএম করে কমিটির সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
একাধিক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী জানান,বর্তমান অ্যাসোসিয়েশনের এর কার্যকারী কমিটি সদস্যদের পক্ষে কোন সমস্যার সমাধান দেন না। সভাপতি দীর্ঘদিন অসুস্থ আর সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় বসবাস করেন। কাস্টমসে কোন সমস্যায় পতিত হলে কর্মকর্তাদের কথা মতই চলতে হচ্ছে।
তারা আরও জানান,সংগঠনের সভাপতি অসুস্থ হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহ-সভাপতি দিয়েও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যায়। নির্বাচন বিলম্ব বিষয়ে সংগঠনটির একাধিক সদস্যের আপত্তি থাকলেও আমলে নিচ্ছেনা চলমান কার্যকারী পরিষদ বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য জানান,ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে গঠিত অ্যাসোসিয়েশান কমিটির অধিকাংশ নেতাই অন্তবর্তী সরকার কর্তৃক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ষোষিত আওয়ামী সংগঠনের।এমনকি কমিটির সাধারণ সম্পাদক লতার পিতা মরহুম হক সাহেব,শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘ বৎসর ধরেই সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি নিজেও একজন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা।
পদ হারানোর ভয়ে চেয়ার আঁকড়ে রাখতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র সংশোধনের অজুহাত তুলে সময়ক্ষেপনের মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের পায়তারা করছে। এছাড়াও পরিষদের কয়েকজন সদস্য পলাতক সহ বিভিন্ন মামলার আসামী রয়েছেন। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার দাবি জানান।
সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সজন এন্টারপ্রাইজের সত্তাধিকারী মফিজুর রহমান সজন বলেন,চলমান পরিষদের মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় সংগঠনটির সাধারন সদস্যদের কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃক ব্যবসায়িক সৃষ্ট জটিলতার কোন সমাধান দিতে পারছেনা অ্যাসোসিয়েশান নেতৃবৃন্দ। এর ফলে সদস্যরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশার। সৃষ্ট জটিলতা এড়িয়ে তিনি দ্রুত এসোসিয়েশান নির্বাচন দাবী করেছেন।
 সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী আলী কদর এন্ড সন্স এর সত্তাধিকারী আলী কদর বলেন, ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশানের সুনাম ও গতিশীলতা ধরে রাখতে কার্যকরী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গঠনতন্ত্র মোতাবেক যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরী। তিনি দ্রুত নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করে সাধারন সদস্যদের মাঝে বিভাজন দুর করার আহবান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ৩০ শে মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সে অনুযায়ী ২০২৫ সালে ৩০শে মে কার্যকরি পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে।

Read more