নিজস্ব প্রতিবেদক: চিকিৎসকের অবহেলা ও মানসিক নির্যাতনে ভোলা ব্যাপারি নামে এক ব্যক্তি স্ট্রোক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২৭নভেম্বর যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটেছে। তিনি শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ার রজব আলীর ছেলে।
স্বজনরা জানান, ভোলা ব্যাপারি ২৭ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির জন্য আনেন। তখন জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক তাকে ভর্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। উপস্থিত লোকজনের চাপের মুখে এক পর্যায়ে জরুরি বিভাগের ওই চিকিৎসক ভোলার স্বজনদের তত্ত্বাবধায়কের কাছে পাঠান। তত্ত্বাবধায়ক মৌখিক অভিযোগ গ্রহণ করে রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তির নির্দেশ দেন। তখন ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক রোগীকে সিটিস্ক্যান করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর স্বজনরা সিটিস্ক্যান করেন। সিটিস্ক্যানে ভোলার ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে বলে রিপোর্ট আসে। স্বজনদের অভিযোগ, ভোলা গত ২১ নভেম্বর দড়াটানা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কুকুরে তাকে কামড় দেয়। পরেরদিন সকালে তিনি হাসপাতালে আসেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইপিআই কেন্দ্র থেকে জলাতঙ্কের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। ২৬ নভেম্বর তৃতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য হাসপাতালে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গোবিন্দ কুমার পোদ্দার তাকে বলেন,‘টিকা নিলেই জলাতঙ্ক যায় না। আপনি তো জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়েছেন। এখানে কোনো চিকিৎসা নেই। টিকা নিয়েও লাভ হবে না।’ বলে ভয় দেখান। পরে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে তাকে খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে রেফার করেন। ডাক্তারের কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ভোলা। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি না করে ঢাকায় রেফার করেন। এ কারণে ভোলা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খুলনা থেকে ফিরে ঢাকায় না গিয়ে বাসায় অবস্থানরত অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোক করেন। সর্বশেষ, ২৭ নভেম্বর তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনলে ভর্তি করতে রাজি হননি কর্তব্যরত চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক। পরে তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক গোবিন্দ কুমার পোদ্দারকে পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান জানান, ভোলা ব্যাপারির স্বজনরা চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক গোবিন্দ কুমার পোদ্দারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।