যশোর অফিস
যশোরে ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে এক বাড়িতে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে হানি ট্র্যাপ চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। এসময় একজন পালিয়ে যায়।
আটককৃতরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের মৃত আবু তালেবের ছেলে শরিফুল ইসলাম, একই গ্রামের জাফরের ছেলে কালু , রমজানের ছেলে সুলতান ওরফে শান্ত, চৌগাছা উপজেলার ইছাপুর গ্রামের শফি
উদ্দিনের মেয়ে শারমিন এবং বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের মেয়ে রোজিনা আক্তার রূপা। এ ঘটনায় নুরপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে মিরাজ শিকদার পালিয়ে যান।ঘটনার পর চৌগাছার পুড়াপাড়ার নাছিম রেজা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদীর মামা আনোয়ার ইকবালের পুড়াপাড়া বাজারে একটি কসমেটিকসের দোকান রয়েছে। প্রায় এক মাস আগে আটক শারমিন দোকান থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে ইকবালের সঙ্গে পরিচিত হন। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে শারমিন ২০ আগস্ট ইকবালকে যশোরের খয়েরতলা মোড়ে দেখা করতে বলেন। দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে দেখা করার পর শারমিন ও রোজিনা মিলে তাকে নিয়ে যান নুরপুর কাশেম মোড়ের মিরাজ শিকদারের ভাড়া বাড়িতে। সেখানে আগে থেকেই উৎপেতে থাকা আসামিরা ইকবালকে বেধড়ক মারপিট করে। এরপর শারমিনের সঙ্গে বসিয়ে তাদের অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ভিডিও ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রের সদস্যরা। এমনকি মারপিটের পর ইকবালের কান্নার আওয়াজ ফোনে শুনিয়ে বাদী নাছিম রেজাকে টাকা পাঠাতে চাপ দেওয়া হয়। বিকাশ নম্বরও দেওয়া হয়।
ঘটনার বিষয়ে জানানো হলে ডিবি পুলিশের এসআই কামরুজ্জামান অভিযান পরিচালনা করেন। ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা জানান, পুলিশ বিকাশ নম্বর ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত করে। ওই নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। টাকা তুলতে আসা শরিফুল ও কালুকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মূল আসামি মিরাজ পালিয়ে যায়।ওসি আরও জানান, এ চক্র বিভিন্ন সময় মানুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।আটক শরিফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালত পাঁচজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, চৌগাছা থানার সাবেক ওসি পায়েল হোসেন একসময় এ চক্রের অন্যতম সদস্য শারমিনের ফাঁদে পড়েছিলেন। শারমিনের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এ ঘটনায় পায়েলকে থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।