সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। দেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রধান বিচারপতি গ্রেফতার হয়ে কারাগারে। যদিও এর আগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাকে দুর্নীতির অভিযোগে করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ১১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। তিনি দেশে না থাকায় গ্রেফতার হননি বলে অনেকেরই ধারণা। তা না হলে তাকেও গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাওয়ার কথা ছিল।
তবে, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হককে গ্রেফতারের পর তাকে দুই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে আদালতে তোলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, বিচার তার নিজস্ব গতিতে চললেও সাবেক প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হচ্ছে না। কারণ তিনি রাষ্ট্রের চতুর্থ ব্যক্তি। আবার কেউ কেউ বলছেন, অতীতে স্বৈরশাসকের আমলে সরকারের সময়ে বিচারের নামে অবিচার চলায় এমনটা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো সরকারের সময়ে এমন আচরণ করা ঠিক না। এ থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত।
সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর রায় নিয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের প্রতি দেশের মানুষের ক্ষোভ আছে। একই দোষে দোষী তার পরবর্তীসময়ে দেশের সাবেক আরও তিনজন প্রধান বিচারপতিও। তবে, আদালতে তোলার সময় সাবেক প্রধান বিচারপতিই নন, দেশের যে কোনো নাগরিককে অপমান-অপদস্থ করে আদালতে না তোলার পক্ষে সবাই একমত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকতে পারে, অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু আইনি পদক্ষেপের বাইরে দুই হাত পেছনে নিয়ে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলা কোনো নিয়ম হতে পারে না। পদাধিকার বলে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক রাষ্ট্রের চতুর্থ ব্যক্তি। তাকে কোন অভিযোগে কোন আইনে বিচার করবে সেটা আদালতের বিচার্য বিষয়। কিন্তু তাকে আদালতে তোলার সময় এভাবে হেনস্থা করা মৌলিক, সাংবিধানিক ও আইনের লঙ্ঘন। কেউ কেউ এর প্রতিবাদও জানিয়েছেন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের গ্রেফতার পরবর্তী আদালতে তোলা, বিচার ও রিমান্ড এসব নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও তার সঙ্গে করা আচরণ নিয়ে কম বেশি সবাই সমালোচনা করছেন।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাকে অবমাননাকর ও অমযার্দাকর আচরণে আমরা বিশ্বাসী না। অবমাননাকর ও অমযার্দাকর আচরণ আগেও দেখেছি। ডান্ডাবেড়ি পরানো দেখেছি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হাত-পা বেঁধে গুম করতে দেখেছি। সেটা শেষ পর্যন্ত ভালো আচরণ না। সেজন্য একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার যে স্ট্যাটাস সে স্ট্যাটাসকে সম্মান দেওয়া দরকার। তিনি সম্মানিত ব্যক্তি। আইন যাকে যেটুকু সুবিধা দিয়েছে তাকে সেই সুবিধা দেওয়া দরকার। যে আইনে উনার বিচার করা দরকার সেই আইন অনযায়ী বিচার হবে। তার মানে এটা নয় যে তাকে অবমাননাকর অপদস্ত করে শাস্তি দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেফতারের পরে যে বিষয়গুলো চোখে পড়েছে সেটা হলো তাকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, যেটা পুরো অযৌক্তিক। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিকে প্রভাবে প্রভাবিত ছিলেন এ রকম অভিযোগ-আলোচনা অনেক দিন ধরেই আছে। সরকার পরিবর্তনের পর সেটাকে তো ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে সেই রায়টা বাতিলও করা হয়েছে। ফলে জুডিসিয়াল প্রসেস শেষ হয়ে গেছে এটা বলা যায় না। কিন্তু আপনি যখন, মিডিয়াগুলো বলছে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। প্রধান বিচারপতি কোনো ব্যক্তি না, প্রধান বিচারপতি একটি প্রতিষ্ঠান।
ভুল মেসেজ সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা নষ্ট
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, যখন প্রতিষ্ঠানকে ক্রিমিনালাইজ করা শুরু করবেন আপনার সতর্ক হওয়া লাগবে রিপোর্ট করার জন্য। খায়রুল হক সাহেব গ্রেফতার হয়েছেন আর প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেফতার কথাটা কিন্তু ভিন্ন রকমের একটা ঘটনার সৃষ্টি করে। মানে ভিন্ন মেসেজ যায় সাধারণ মানুষের কাছে এবং সেই মেসেজটা খুব একটা ভালো মেসেজ নয়। জুডিসিয়ারি রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান অসম্মান করে যদি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেন তাহলে প্রতিষ্ঠানের সম্মান যাওয়ার পাশাপাশি দেশের মানুষের সম্মানহানির প্রশ্ন এখানে। সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গাটা নষ্ট হওয়ার বিষয়ে কাজ করে। সেটা যাতে না হয় সেই চেষ্টাটা থাকতে হবে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে এবিএম খায়রুল হককে আদালতে তোলার পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, আসলে ওনার প্রতি পুরো ট্রিটমেন্ট হয়েছে খুবই অন্যায়ভাবে। পিছমোড়া করে বেঁধে যেভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে, এটাও অপ্রয়োজনীয়। পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল ১৯৪৩-এ গ্রেফতার করবে কীভাবে, হ্যান্ডকাপ পরাবে কীভাবে, এগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া আছে। কেউ যদি পালিয়ে যেতে পারে এসব ক্ষেত্রে তাকে পিছমোড়া করে বাঁধবেন না কীভাবে বাঁধবেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। সেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সাবজুডিস ম্যাটার। সিচুয়েশন দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, দেশের কোনো প্রধান বিচারপতিকে জেল দেওয়া, মামলা দেওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। দুনিয়ার সব স্থানেই এটা অস্বাভাবিক ঘটনা। নানান দেশে নানান উদাহরণ তৈরি হয়েছে। আগেও যিনি সাবেক প্রধান বিচারপতি ছিলেন সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা, উনি দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। অবশেষে দুর্নীতির মামলায় উনার সাজাও হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের মতো এরকম মিশরের প্রধান বিচারপতিকেও জেলে ঢোকানো হয়েছিল।
রায় পরিবর্তন মানে বিচারিক প্রতারণা
শিশির মনির বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় উনি যে শর্ট অর্ডারটা চেঞ্জ করে দিয়েছেন থার্টিন অ্যামেন্টমেন্ড মামলায়, উনি ওপেন কোর্টে যে আদেশটা ঘোষণা করেছিলেন, পরে লং জাজমেন্টে আমরা যে আদেশটা পেয়েছি দুটো দু’রকম। শট অর্ডারের কপি, আবার পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্টের কপিও আমাদের কাছে আছে। সুতরাং এটা তো একটা ভালো অ্যাভিডেন্স। এটা কী করে সম্ভব যে দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় থেকে এভাবে একটি রায়কে চেঞ্জ করে দেওয়া। এটা ফ্রড বা প্রতারণার শামিল। ওপেন কোর্টে যা বলছেন এটা তো পূর্ণাঙ্গ রায়ে থাকে, এটা বড় ধরনের একটা কাজ উনি ইচ্ছা করেই করেছেন। সেকেন্ড বিষয় হলো থার্টিন অ্যামেন্ডমেন্ডের রায়ের কারণে রাজনৈতিক যে কনসিকোয়েন্স হয়েছে তাতে তার (বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের) দায় কতটুকু সময় বলে দেবে। প্রধান বিচারপতি ও অন্য বিচারপতিরা বিভিন্ন সময়ে যে রায় দিয়েছেন যার ফলে অনেক কনসিকোয়েন্স হয়েছে অনেক স্থানে।’
গণতন্ত্র নির্বাসনে পাঠিয়েছেন এবিএম খায়রুল হক
বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের গ্রেফতার ও আদালতে হাজির করার প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ‘যে কোনো কারণেই হোক সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের প্রতি দেশের ব্যাপক মানুষের ক্ষোভ আছে। ক্ষোভটা আছে এ কারণে যে একটি সেটেল মেটারকে তিনি এবং সঙ্গে আরও তিন বিচারপতি ওই বেঞ্চের সাতজনের মধ্যে। তিনজনই আবার পরে প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন ধারাবাহিকভাবে। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এই চারজন মিলে একটা সেটেল মেটারকে আনসেটেল করেছিলেন। এমন একটা যুক্তিতে যে দেশে যে কোনো মুহূর্তে অনির্বাচিত কোনো সরকার থাকতে পারবে না। সেটা করতে গিয়ে দেশ থেকে গণতন্ত্র নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছে।
খায়রুল হকের দোষে সাবেক ৩ প্রধান বিচারপতিও দোষী
সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, আমার মতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকসহ সাবেক আরও তিন প্রধান বিচারপতির প্রতি দেশের মানুষের একটা বিরাট ক্ষোভ ছিল। খায়রুল হকের ওই শর্ট অর্ডারের পর রায়ে সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা রেফারেন্স দিয়ে বলেছিলেন, এটা ঠিক হয়নি। ওয়াহহাব মিঞা তীব্র সমালোচনা করেছিলেন উনার সঙ্গে একই বেঞ্চে থেকে। খায়রুল হকের এটা একটা জালিয়াতি। আর জালিয়াতিটা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করার প্রয়াস এবং সংবিধানকে নস্যাৎ করার প্রয়াস। সেজন্য সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ এর (ক) ও (খ) অনুযায়ী। ৭ (ক) সংবিধানকে স্থগিত করার চেষ্টা। তবে হত্যা মামলায় উনাকে গ্রেফতার করাটা সঠিক হয়নি বলেও জানান তিনি।
সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, খায়রুল হককে যেভাবে আদালতে তোলা হয়েছে দুই হাত পেছনে মুড়ি করে হাতকড়া দিয়ে বেঁধে, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। এক্ষেত্রে দৃঢ়তার সঙ্গে বলবো, বরং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বিগত আমলে যখন উনাকে লোহার খাচায় ঢোকাত, বিভিন্নভাবে অপমান করতো, উনি বলতেন যে এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি শুধু খায়রুল হক না, কোনো নাগরিককে হাতকড়া পরিয়ে এভাবে আদালতে ওঠানো ঠিক না।
সৈয়দ মামুন মাহবুব আরও বলেন, ‘আমি আরও একটা বিষয় বলব পুলিশ প্রশাসন এত দুর্বল যে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ১২ মাস ধরে ঢাকায় ধানমন্ডিতে তার বাসায় ছিলেন। নিজের নিরাপত্তা নিজেই দিতে পেরেছেন। পুলিশ অ্যারেস্ট করে তাকে হেলমেট এবং লাইফ জ্যাকেট পরায় কেন? একজন নাগরিককে অ্যারেস্ট করার পর নিরাপত্তা দিতে পারে না।’ এই পুলিশ কীভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা ধরি যে উনি রাষ্ট্রের চতুর্থ ব্যক্তি ছিলেন, তার পদ অনেক বড়। রাষ্ট্রের যে কোনো নাগরিককে এভাবে আদালতে ওঠানোর কথা নয়। আমাদের জেল কোডে আছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি যদি পালানোর চেষ্টা না করে তাকে ডান্ডাবেড়ি পরানোর বিধান নেই। আমরা অতীতে আগের স্বৈরশাসনের আমলে দেখেছি বিএনপি নেতাদের প্যারোল দিয়েছে কিন্তু হাতকড়া খুলে দেয়নি। হাতকড়া অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়তে দেখেছি গাজীপুরে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের এক নেতার। আমি তখনো দৃঢ় প্রতিবাদ করেছি। অন্যায় যখন হবে প্রতিবাদ আমি করবই।’
আইনের, নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের খেলাপ
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী বলেন, শুধু সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকই নন, হাত পিছমোড়া করে বাঁধার রীতি কোনো আসামির ক্ষেত্রেই নেই। যদি কাউকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়, তা হলে তার দুই হাতে আলাদা একটা করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে রাখতে পারে। দুজন পুলিশ সদস্য দুদিকে ধরে রাখতে পারেন। কিন্তু তার হাত পেছনে দিয়ে বাঁধাটা আইনের, নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের খেলাপ।
ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী বলেন, সে যদি হ্যাপিচুয়াল অফেন্ডার না হয়, স্বভাবগত অপরাধী না হয়, তাকে এভাবে হাত পেছনে নিয়ে বাঁধাটা দেশের সংবিধান, কোনো আইন বা নীতিমালা সাপোর্ট করে না। এছাড়া যেসব রাজনৈতিক নেতাকে আদালতে আনা-নেওয়া হচ্ছে তারা যদি কোনো রকমের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বা বাড়াবাড়ি না করেন তা হলেও তাদের পিছমোড়া করে বাঁধা অন্যায়। যদি কেউ আম্ফালন করে, বাড়াবাড়ি করে বা সেখানে জনমত সৃষ্টির চেষ্টা করে হাত তোলে, তখন হয়তো তার হাতটা পিছমোড়া করে বাঁধতে হতে পারে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক একজন বৃদ্ধ নাগরিক। তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বা হাত-পা ছোড়াছুড়ি করেছেন, ইশারা-ইঙ্গিত করার চেষ্টা করেছেন, এমন কিছু আমরা দেখিনি বা পুলিশও বলেনি এমন কিছু করেছেন। সুতরাং ওনাকে এমনি এমনি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারতেন।
এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে কোন আইনে বিচার হতে পারে এ বিষয়ে ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী বলেন, ‘উনি (বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক) যদি এখনো বিচারক থাকতেন তা হলে তাকে বিচারপতির পদ থেকে রিমুভ করার জন্য একটা প্রসিডিং হতে পারতো বা কনটেম্পট অব কোর্ট হতে পারতো। বিচারকের বিরুদ্ধেও কনটেম্পট অব কোর্ট হয় যদি বিচারকের বিরুদ্ধে কোর্টের অসম্মান করার অভিযোগ ওঠে। অ্যাডভোকেটরা কোর্টের অফিসার আর বিচারকরা কোর্টের প্রিসাইডিং অফিসার। সবাইকে সংবিধান, আইনের মধ্যে এবং সততার মধ্যে কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। এখন যেহেতু তিনি বিচারকের আসনে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে নেই, তার বিরদ্ধে ফৌজদারি আইনের টু জিরোতে প্রতারণার শাস্তি এবং তার আগের সেকশনে প্রতারণার সংজ্ঞা খতিয়ে দেখলে হবে সেখানে পড়ে কি না। আদালতের নথিতে যে ডিস্টটরশেন করা হয় সেটারও কিছু ফৌজদারি প্যানেল ধারা আছে।