কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার চান্দাশ এলাকায় চাচাতো ভাইয়ের জানাজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে মো. আলাউদ্দিন নামে সাবেক ইউপি সদস্যকে হত্যা করেছে দুবৃর্ত্তরা। তারা তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে এঘটনা ঘটে । নিহত আলাউদ্দিন বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে।
তবে ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে ফজলুল হক বলেন, ‘নিহত আলাউদ্দিনের শরীরে গুলির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ধারাল অস্ত্রের কোপ রয়েছে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জের ধরে রোববার দুপুরে আলিয়ারা গ্রামে ওঁৎ পেতে থাকে একদল দুর্বৃত্ত। আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজা শেষে বাড়িতে প্রবেশের সময় হাত বেঁধে সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে তুলে নেয়। পরে বাড়ি থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে চান্দাশ এলাকায় নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে সড়কের পাশে ফেলে দেয়। পরে স্বজনরা আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন ও সালেহ আহম্মদ গ্রুপের মধ্যে গরু চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিল। এই ঘটনার সূত্র ধরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
নিহত আলাউদ্দিনের ভাগিনা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুর আনুমানিক একটার দিকে আমার মামা আনোয়ার হোসেনকে আলিয়াড়ার বাড়ির সামনে থেকে সিএনজিতে করে তাকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে খবর পেয়ে আমি ওই সিএনজির পিছু নিলে চান্দাইস এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা আমার মামাকে গুলি করে ফেলে দিয়ে যায়।
বারেক ভুইয়া নামে আলাউদ্দিনের অপর এক স্বজন জানান, আলাউদ্দিন মামা তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী তাকে তুলে নিয়ে যায়। এসময় আমি খবর পেয়ে শুভপুর এলাকায় তাদের আটকানোর চেষ্টা করি। এসময় চন্দাইশ এলাকায় পৌঁছালে তারা মামাকে গুলি করে ফেলে দেয়। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। নিহত সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনের শরীরে কোনো গুলির চিহ্ন পাইনি, তবে ধারাল অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। খুনের সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল আমিন জানান, ওই এলাকায় কয়েকটি গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব দীর্ঘ ২০-২৫ বছরের। কিন্তু আলাউদ্দিন মেম্বারকে কারা হত্যা করেছে এটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই দ্বন্দ্ব নিরসনে আগেও অনেকে চেষ্টা করা হয়েছিল শুনেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে।