রাজশাহী প্রতিনিধি: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়া এবং ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট রোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জুড়ে সাত দিনের চলছে কঠোর লকডাউন। প্রশাসনের পক্ষে হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কেউ যেন বের বা ঢুকতে না পারে সেই জন্য জেলার সকল উপজেলা হতে মুল সড়ক ও কিছু লোকার সড়কও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জেলার সকল মানুষকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের হতেও নিষেধ রয়েছে।
এতো কিছুর পড়েও বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে সংক্রমণের ভয়ে চাঁপাই ছেড়ে পালাচ্ছে শত শত মানুষ। এর বেশির ভাগ যাচ্ছে চাঁপাই জেলার পাশ ঘিসা রাজশাহীর দুই উপজেলায়। তারা আশ্রয় নিচ্ছেন তানোর-গোদাগাড়ীতে থাকা আত্মস্বজনদের বাসা-বাড়িতে।
এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছেন দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। গত দুই দিন যাবত তানোর ও গোদাগাড়ীর থানা- পুলিশ চাঁপাই হতে যেন কোন মানুষ এ দুই উপজেলায় ঢুকতে না পারে সেই জন্য প্রধান প্রধান সড়কে চেক পোষ্ট বসিয়েছেন তাদের যাতায়াত ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। তবে চাঁপাই ছেড়ে আসা ব্যাক্তিদের সরনার্থীদের সাথে তুলনো করেছেন তানোরে সিমানায় চেক পোষ্টে থাকা কয়েক জন পুলিশ কর্মকর্তা। তারা বলছেন,সংক্রমণের ভয়ে বেশি ভাগ মানুষ ছোট শিশু-বৃদ্ধ ও হাড়িপাতিল পুটলা-পাটলি নিয়ে তানোর ও গোদাগাড়ীতে থাকা আত্মস্বজনদের বাসা-বাড়িতে চলে আসছেন। কিন্ত তাদের কোন অজুহাত না শুণে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকাল হতে চাঁপাই সদর উপজেলার আমনুরা ধামধুম গিয়ে দেখা গেছে সেখানের সড়কের ব্রিজের উপরে দিয়ে বাশ দিয়ে ব্যারিকেট দিয়েছেন পুলিশ। সেখানের মুন্ডুমালা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ চেক পোষ্ট বসিয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮ থেকে বেলা দুইটো পর্যন্ত প্রায় তিন শতাধিক ব্যাক্তি সরনার্থীরমত পুটলা-পাটলি বেধে শিবগঞ্জ-কানসান হতে তানোরের বিভিন্ন গ্রামে আসার জন্য ভিড় করছেন চেক পোষ্টে।
কিন্ত কোন অজুহাত না শুনে পুলিশ তাদের ঢুকতে দেইনি। তবে তারা ফিরেও যাইনি। তারা পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে চেক পোষ্ট থেকে ফিরে মাঠে মধ্যে দিয়ে পায়ে হেটে তানোর ঢুকে পড়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
শিবগঞ্জ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে তানোরের বাধাইড় ইউনির্য় একটি গ্রামে কয়েকজন এসেছেন। না প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন,শিবগঞ্জ-কানসাটে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক মানুষ বাড়ি মারা যাচ্ছে। তাই তারা সেখানে আর থাকতে চাইনা। সে কারণে এখানের থাকা আত্মবাড়িতে পালিয়ে এসেছেন।
এদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে তানোর উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়ন মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় গোদাগাড়ীর বিভিন্ন গ্রামে শত শত মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ তথ্য দিয়েছেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকমপ্লে´ এর চিকিৎসকেরা। তারা বলছেন স্বাথ্য কমপ্লে´গুলোতে করোনার সিমথন বা উপসর্গ আছে এমন রোগে বেছে কয়েকগুণ।
মুন্ডুমালা স্বাস্থ্য কমপ্লে´ এর সহকারী চিকিৎসক ডা: দুরুল হদা বলেন, প্রতিদিন যে সাধারণ রোগী আসে গত কয়েক দিয়ে তার চেয়ে তিন-চারগুণ রোগি তার এখানের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। যার বেশি ভাগ ছিল করোনা উপসর্গ। জ্বর,সর্দ্দিকাশি ইত্যাদি নিয়ে।
মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ইনচার্জ মিজান তিনি তিন দিন যাবত তানোরের শেষ সিমানা আমনুরা ধামধুম নামক স্থানের চেক পোষ্ট বসিয়েছেন।
কথা হয় তার সাথে তিনি বলেন,এ তিন দিনে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ চাঁপাই এর বিভিন্ন অঞ্চল হতে তানোরে আত্মস্বজনদের বাড়িতে আসার জন্য সরনার্থীর মত লাইন ধরে আসতে চেয়েছে।কিন্ত পুলিশের বাধায় তারা ঢুকতে পারিনি। তবে চাপাই থেকে আসা ব্যাক্তিরা অনেকটা সংক্রমণের ভয়ে পালিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন।
তবে,তারা ফিরে গেছেন কিনা এমন প্রশ্ন করতে তিনি বলেন,মুল সড়ক দিয়ে তারা আসতে পারেনি। তবে অন্য কোন বিকল্প ভাবে পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে ঢুকেছে কিনা সেটা বলতে পারবোনা।