ঢাকা অফিস :
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান ‘এফ-৭ বিজিআই’ কি ঘটনা ঘটেছিল গতকাল স্মরণকালের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর এমন প্রশ্নই এখন সামনে চলে এসেছে ” আন্তবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলার বিমান বাহিনীর এ কে খন্দকার ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়।
এই দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের দোতলা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
জানা যায় , উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ছিল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের সৌল ফ্লাইট ট্রেনিংয়ের অংশ ‘ সদ্য বিবাহিত এ তরুণ পাইলট এদিনই তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনিং ফ্লাইটে অংশ নিচ্ছিলেন।
” শেষ মুহূর্তের চষ্টায় পাইলট বাঁচাতে চেয়েছিলেন বিমানটিকে “
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দুপুর ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলা পুরাতন এয়ারফোর্স বেস থেকে ‘এফ-৭ বিজিআই’ মডেলের যুদ্ধবিমানটিতে এককভাবে উড্ডয়ন করেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির।
সৌল ফ্লাইট ট্রেনিংয়ে কোনো কো-পাইলট, নেভিগেটর বা ইন্সট্রাক্টর থাকে না। সৌল ফ্লাইট ট্রেনিং হলো একজন পাইলটের ট্রেনিংয়ের সর্বশেষ ধাপ।এটি একজন ফাইটার পাইলটের দক্ষতা ও প্রস্তুতির সর্বোচ্চ পর্যায় প্রমাণ করে।
জানা গেছে, সাধারণত ট্রেনিং ফ্লাইটগুলো জনবসতি থেকে দূরে পরিচালিত হয়। তবে সৌল ফ্লাইট ট্রেনিং অনেক সময় শহরের আকাশপথেই সম্পন্ন হয়, যেটির জন্য প্রয়োজন হয় উচ্চমাত্রার দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস।
তৌকির ছিলেন এমন একজন কোয়ালিফায়েড পাইলট, উড্ডয়নের পর তিনি উত্তরা, দিয়াবাড়ী, বাড্ডা, হাতিরঝিল ও রামপুরা এলাকা হয়ে উড়ছিলেন।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি বিমানে কারিগরি সমস্যার আভাস পান এবং কন্ট্রোল রুমে জানান, বিমানটি নিচের দিকে নামছে ও স্বাভাবিক ভেসে থাকার ক্ষমতা হারাচ্ছে বলে বার্তা দেন তিনি।
তাৎক্ষণিকভাবে কন্ট্রোল রুম থেকে তাঁকে ইজেক্ট (জরুরি অবস্থায় পাইলটের সিট খুলে তাঁকে বের করে দেওয়া) করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তৌকির শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমানটি বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
তিনি সর্বোচ্চ গতিতে বিমানটিকে ঘুরিয়ে এয়ারবেসের দিকে ফেরার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে হঠাৎ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মাত্র এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যেই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিধ্বস্ত হয়।