যশোর জেলা পরিষদের বিভিন্ন সড়কে লাখ লাখ টাকার গাছ চুরি ধরাছোঁয়ার বাইরে জড়িতরা 

যশোর প্রতিনিধি : যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন বিভিন্ন সড়কের লাখ লাখ টাকার গাছ চুরির ঘটনা বন্ধ হয়নি, আরো বেড়েই চলেছে। এসব গাছ চুরিরএক এক করে বেরিয়ে আসছে এসব চুরির ঘটনা। তদন্তেও ধরা পড়েছে। এ পর্যন্ত কয়েকশ মামলা হয়েছে কিন্তু কোন লাভ হয়নি তাতে। যেখানে শর্ষের মধ্যে যেমন ভূত থাকে তেমনি জেলা পরিষদের কিছু দুর্নীতি পরায়ন ও ক্ষমতাসীনদের কারনে তারা সবসময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তারা ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্যে চুরির নাটক সাজিয়ে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কায়দায়।

একাধিক সুত্র থেকে জানায়, ২০২১ সালের মে মাসে কুয়াদা বাজারের খালেক স’মিলে জেলা পরিষদের চুরি করা প্রায় লাখ টাকার গাছ কাটানো হয়। ঘটনার সাথে জড়িতরা এ গাছ কাটায়। খবর পেয়ে পরিষদের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। ওই সময় স্থানীয়দের সামনে মিল মালিক আব্দুল খালেক ও হেড মিস্ত্রি আব্দুল লতিফ এ চুরির সাথে জড়িত জেলা পরিষদের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম বলেন। অবশ্য, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ তাদের নাম বাদ দিয়ে চুরির অভিযোগে ওই দু’জনকে আসামি করে মনিরামপুর থানায় মামলা করেন। সে সময় অভিযোগ ওঠে লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি ছিলেন ঘটনার অন্তরালে। কারণ ওই গাছ কাটার যে লেবার সর্দার ছিল, সে তার ভাগ্নে বলে স্থানীয়রা জানান। এ সংক্রান্ত মামলা করার জন্যে গত বছর ১১ মে মনিরামপুর থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেখানে উল্লেখ রয়েছে আরও ২টি মেহগনি গাছ কেটে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একটি সূত্র মতে, সে গাছ সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর সঙ্গে সাতক্ষীরায় যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি সত্য বলে জানিয়েছেন। জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল।
গত মার্চ মাসে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের হৈবতপুর থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার গাছ চুরি হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই গাছ সার্ভেয়ার আল-আমিন শাওন বিক্রি করেন। এ বিষয়ে সাইফুজ্জামান পিকুল ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেন। তিনি জানান, ঠিকাদারের সিকিউরিটি মানি থেকে সে টাকা কর্তন করা হচ্ছে। ঠিকাদার সার্ভেয়ারের নাম স্বীকার না করলেও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে রয়েছেন আল-আমিন।
২০২১ সালের নভেম্বরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাজমুল হুদার নেতৃত্বে আরও ২ জন উপসচিব সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দুর্নীতির তদন্ত করেন। যশোর-খুলনা মহাসড়কের গাছ বিক্রির প্রায় ২৬ লাখ টাকা জেলা পরিষদের ফান্ডে জমা না দেয়ার বিষয়টি তাদের হাতে ধরা পড়ে। তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে আপত্তি দিলে পরবর্তীতে ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই টাকা জমা দেয়া হয়। তদন্ত কমিটি গঠন ও টাকা কর্তনের বিষয়ে সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, কমিটি গঠন ছিল তাকে হ্যারাজ করার জন্যে। তবে তিনি স্বীকার করেন, ২৬ লাখের মতো টাকা জমা না হওয়ার আপত্তি ছিল। পরবর্তীতে ঠিকাদারকে সুদসহ প্রায় দ্বিগুণ টাকা শোধ করতে হয়েছে।