যশোর প্রতিনিধি
যৌতুকের জন্য পাষান্ডস্বামীসহ তার আত্মীয় স্বজনেরা গৃহবধূ ও তার মাকে মারপিটসহ অন্যান্যদের খুন জখমের হুমকী দেওয়ায় রোববার রাতে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন, যশোর শহরের গোলপাতা মসজিদ রুস্তম ফকির এর বাড়ির ভাড়াটিয়া হাজারী গেটের শুকুর আলীর স্ত্রী মোছাঃ হালিমা বেগম। মামলায় আসামী করেছেন,জামাতাসহ ৪জনকে। এরা হচ্ছে,যশোর শহরের নাজির শংকরপুর হাজারীগেট এলাকার মিলন শেখ এর ছেলে মোস্তাকিম,সহোদর রাশেদ,মিলন শেখ এর স্ত্রী মোছাঃ মনোয়ারা বেগম ও রাশেদ এর স্ত্রী মোছাঃ জামিলা । পুলিশ যৌতুক লোভী স্বামী মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করেছে।
যশোর শহরের হাজারী গেট বর্তমানে গোলপাতা মসজিদের রুস্তর ফকিরের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোছাঃ হালিমা বেগম বাদি হয়ে মামলায় উল্লেখ করেন, বাদির মেয়ে আকলিমা (১৯) কে ২ বছর পূর্বে মোস্তাকিমের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর ঘর সংসার করাকালে দেবর রাশেদ,মাতা মনোয়ারা বেগম, জা মোছাঃ জামিলার ইন্দনে ও কু পরামর্শে আকলিমার কাছে যৌতুক দাবি করে সর্বক্ষন খুন জখমের হুমকীসহ কথায় কথায় মারপিট করে আহত করে আসছে। নানাভাবে মানসিক চাপসৃষ্টি করে থাকে। বিষয়টি বাদি জানতে পেরে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মেয়ের সাংসারিক বিভিন্ন মালামাল যার মূল্য ৩০ হাজার টাকা বিভিন্ন সময় বাদি হোটেলে কাজ করে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করে। তার পরও আসামীদের চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলতে থাকে। আসামিদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাদির মেয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারী হারপিক খেয়ে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আশপাশের লোকজনের পরামর্শে বাদির মেয়েকে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করে ওয়াশ করায়। বিষয়টি বাদি হাসপাতালে যেয়ে মেয়ের কাছে শুনে আসামীদের এহেন কর্মকান্ড করতে নিষেধ করলে তারা বাদির সাথে খারাপ আচারণ করে। যৌতুক না দিলে বাদির মেয়ের সাথে সংসার করবে না বলে হুমকী দেয়। হাসপাতাল হতে চিকিৎসা শেষ করে বাদি তার মেয়েকে জামাতার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ঔষুধ না খেয়ে ফেলে রাখে। গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় জামাতা মোস্তাকিম তার সহযোগী মনোয়ারা বেগম ও মোছাঃ জামিলার কু-পরামর্শে ও ইন্দনে বাদির মেয়ের নিকট ১লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। আকলিমা যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে জামাতা মোস্তাফিক আকলিমার গলায় চেপে ধরে শ^াসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। তলপেটসহ বুকে পিঠে লাথি ও কিল ঘুষি মেরে তাল পেটে গুরুতর জখম করে। যার ফলে আকলিমা ১৮ বার রক্ত বমি করে। তার পরও মোস্তাফিক ধারালো দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বাদির মেয়েকে গলায় কোপ দিতে গেলে ডান হাতে কবজির নিচে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়। তাকে জখম প্রাপ্ত অবস্থায় আকলিমাকে আটক করে রাখলে বাদির মাতা মোছাঃ নূর জাহান বেগম ওরফে নূরীসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঠেকাতে গেলে আসামীরা হুমকী দিতে থাকে। বাদিকে সংবাদ দিলে বাদিসহ তার স্বামীও আত্মীয়স্বজন নিয়ে আসামীদের বাড়িতে গেলে তারা হুমকী দেয়। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আকলিমাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ রোববার রাতে আসামী মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করে সোমবার আদালতে পাঠিয়েছে।