গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ঈদ উদযাপন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের যে বাসা ফিরোজায় অবস্থান করছেন সেখানেই উনি ঈদ উদযাপন করবেন’।
‘উনার পরিবারের পক্ষ থেকে যে কুরবানি সেটা এখানেই (ফিরোজায়) দেওয়া হবে। উনার জ্যেষ্ঠ ছেলে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের নামে কুরবানিও এখানে (ফিরোজায়) হবে’।
ঢাকা ছাড়াও বগুড়ার গাবতলীদের বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে কুরবানি দেওয়া হবে জানিয়ে জাহিদ বলেন, ‘এছাড়াও কয়েকটি জেলায় দলের নেতাকর্মীরা ম্যাডামের নামে কুরবানি দেবেন।’
নিকট স্বজনদের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাবেন
ঈদের দিন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত গুলশানের ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়া তার নিকট স্বজনদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাবেন। এই সময়টা রাখা হয়েছে শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের জন্য।
জাহিদ বলেন, ‘উনার(খালেদা জিয়া) মেজো বোন সেলিনা রহমান, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ তাদের পরিবার এবং ম্যাডামের ঘনিষ্ট নিকট আত্বীয় স্বজন যারা ঢাকায় ঈদ করছেন তারা মূলত ফিরোজায় এসে ম্যাডামের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন এবং ম্যাডাম তাদেরকে সময় দেবেন।দুপুরের খাবার উনি স্বজনদের নিয়েই খাবেন’।
বিএনপি চেয়ারপারসনের কর্মসূচি
রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যগণের সঙ্গে গুলশানের ফিরোজায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন খালেদা জিয়া।
ছেলের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ বলেন, ‘এখানে মনে রাখতে হবে, উনার (খালেদা জিয়া) যে জ্যেষ্ঠ সন্তান বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব…উনার অ্যাকচুয়ালি ঈদ হচ্ছে ৬ জুন মানে আজকে শুক্রবার লন্ডনে ঈদুল আজহা উদযাপন হচ্ছে। ইতোমধ্যে তারেক সাহেব দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন’।
‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে উনার সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ আছে। সে অনুযায়ী ছেলের সঙ্গে মায়ের শুভেচ্ছা বিনিময় বা উনাদের মধ্যে যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার সেটা উনারদের মতো করে করেছেন’।
শুক্রবার সকালে লন্ডন থেকে তারেক রহমান টেলিফোনে মাকে ঈদ মোবারক জানিয়েছেন এবং পুত্রবধূ ও নাতনিদের সঙ্গেও কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান, তার সহধর্মিনী জুবাইদা রহমান, মেয়ে ব্যারিস্টার জায়মা রহমান, প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিনী সৈয়দা শামিলা রহমান, মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান সবাই লন্ডনে একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন বলে জানান জাহিদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে রওনা হয়ে রাতে জুবাইদা রহমান লন্ডন পৌঁছান। এর দেড় সপ্তাহ আগে কোকোর স্ত্রী লন্ডনে ফিরে যান।
দুই পুত্রবধূকে নিয়ে গত ৬ মে খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে চিকিসা শেষে ঢাকায় ফেরেন।
দেশবাসীসহ নেতাকর্মীদের ঈদ মোবারক
জাহিদ বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) দেশবাসীসহ সারা দেশ ও প্রবাসে দলের নেতাকর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সবাইকে উনার জন্য দোয়া করার জন্য উনি বলেছেন’।
‘তিনি বলেছেন, দেশের মানুষের জন্য, মুসলিম উম্মার জন্য উনি দোয়া করেন, উনি নিজেও সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং অন্যদেরও উনার জন্য দোয়া করতে বলেছেন’।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত এই চিকিৎসক বলেন, ‘ম্যাডাম এই মুহূর্তে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে…উনি যেরকম লন্ডন থেকে আসার সময় দেখেছেন অর্থাৎ গত ৬ মে লন্ডন থেকে উন্নত চিকিৎসা শেষ করে বাংলাদেশে ফেরেন…আলহামদুলিল্লাহ, উনার শারীরিক অবস্থা একরকম স্থিতিশীল আছে’।
‘উনার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সদস্যরা নিয়মিতভাবে উনার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর রাখছেন, মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে ফিজিক্যালি প্রতিদিনই যেগুলো এক্সজামিন করা সেগুলো করা হয়ে থাকে’।
ঈদের আনন্দ যেন সবাই ভাগ করে নেয়
জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডাম স্বাভাবিকভাবে দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেন। সাধারণ মানুষ যাদের মাঝে ঈদ মানে উৎসব, ঈদ মানে আনন্দ এটা যাতে ঠিক মতো সবাই করতে পারে সে ব্যাপারে উনি খুবই কনসার্ন’।
‘উনি সেজন্য সব সময় বলেও থাকেন যে, সাধারণ মানুষ যদি ঈদে আনন্দ থাকে, তাদের জীবনটা যদি নির্বাহ করা একটু সহজ হয় তাহলেই ঈদ তার সার্থকতা পাবে’।