বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রকৌশলী শাহেদ রেজার বিরুদ্ধে র্দুনীতি অনিয়মের অভিযোগ

Share

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী শাহেদ রেজার বিরুদ্ধে র্দুনীতি অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানান যায়, পরিবহন প্রশাসকের বিভিন্ন নির্দেশ প্রকৌশলী শাহেদ রেজা দীর্ঘদিন ধরে অমান্য করে আসছে। উপাচার্যের মৌখিক নির্দেশনাও অগ্রাহ্য করেন। সময়মত তিনি অফিস করেন না।

পরিবহন প্রশাসকের রুম খালি করে দেয়ার কথা বলা হলেও খালি করেননি। তিনি পরিবহন প্রশাসকের মৌখিক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে (ট্রান্সপোর্ট অফিসিয়াল) লিখিত নির্দেশনা আমলে নিচ্ছে না। ফলে বর্তমানে ৩টি গাড়ি (১টি বাস, ১টি মাইক্রো ও ১টি পাজেরো) অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে পরিবহন পুলের ২৬টি গাড়ির মধ্যে ১১টি গাড়ি রেজিস্ট্রেশন বিহীন ও ১৫ টি গাড়ি ফিটনেস সার্টিফিকেট বিহীন অবস্থায় চলাচল করছে। বিগত প্রায় ২ মাস আগে বিভিন্ন গাড়ির মেরামতের জন্য ড্রাইভাররা রিকুইজিশন ফর্ম অফিসে জমা দেয়।

কিন্তু সেগুলো যাচাই-বাচাই করে গাড়িগুলি মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যেমন রেজিস্ট্রারের ব্যবহৃত এ্যাভেনজার গাড়িটির সাসপেনশনের কাজ করার জন্য গাড়ির চালক মনির পরিবহন অফিসকে জানালে পরিবহন প্রশাসক প্রথমে মৌখিক ভাবে ও পরে লিখিত ভাবে নির্দেশ দিলেও বিগত ২৫ দিনেও ওই কাজটি করা হয়নি।

ফলে যে কোন মুহূর্তে আরো কয়েকটি গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে পারে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হতে পারে। বিগত ৪ মাসে (জুলাই ২০২৪ থেকে আজ পর্যন্ত) বিভিন্ন গাড়ি মেরামতের জন্য যন্ত্রাংশ ক্রয়ের কোন রিসিট বা বিল-ভাউচার তিনি পরিবহন প্রশাসককে দেখাতে পারেননি। রিসিট বা বিল-ভাউচার দেখানোর জন্য প্রথমে ১৩/১১/২০২৪ তারিখ ও পরে সময় বৃদ্ধি করে ২০/১১/২০২৪ তারিখ পর্যন্ত সময় নিলেও এখনো সেটি সম্পন্ন করে পরিবহন প্রশাসক শিমুল ইসলামের সামনে উপস্থাপন করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িগুলোর জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান (সাধারণ বীমা কর্পোরেশন) থেকে বীমা গ্রহণ না করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বীমা গ্রহণ করেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বীমা করার কারনে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রায় ২০ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। আর এ টাকার অধিকাংশই সহকারি প্রকৌশলী শাহেদ রেজা আতœসাত করেন। পরিবহন দপ্তরের একজন কর্মচারীর সাথেও শাহেদ রেজা দুর্ব্যবহার করেছেন।

আর এ সব কারনে ঝিনাইদহের ভেটেরিনারি হাসপাতালে ২৪ সালে ১ ডিসেম্বর বদলি করা হয়। একই সাথে পরিবহন দপ্তরের যাবতীয় হিসাব নিকাশ সাত দিনের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়া ও ঝিনাইদহ ক্যাম্পাসে সর্বক্ষনিক অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়। সাত দিনের মধ্যে হিসাব নিকাশ বুঝে না দেয়ায় রেজিষ্ট্রারের দপ্তর থেকে আবারো তাকে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি স্বশরীরে হাজির হয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে হিসাব ও দায়িত্ব বুঝে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি সে নির্দেশ মানেননি। এর আগে ২৪ সালের ৩ এপ্রিল রিজেন্ট বোর্ডের ৯৮ তম সভার ৯৮/১৬ নং সিদ্দান্তের প্রেক্ষিতে মাহেদ রেজার বিরুদ্ধে ৪ টি সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সিদ্ধান্ত গুলো হলো

সহকারী প্রকৌশলী (পরিবহন) শাহেদ রেজাকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারির সাধারণ আচরণ, শৃংঙ্খলা ও আপীল সংক্রান্ত বিধি ৬ এর (২) উপ-বিধি (১) এর (ক) মোতাবেক তিরস্কার করা হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কোন কারণ ছাড়াই গুরুদন্ড প্রদান করা হবে।

সহকারী প্রকৌশলী (পরিবহন) শাহেদ রেজা, সহকারী মেকানিক ইমরান হোসেন, চালক শাহিন হোসেনের কাছ থেকে আদায়কৃত ভাড়ার ১০,০০০ দশ হাজার টাকা বিশবিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য বলা হয়।

সহকারী মেকানিক ইমরান হোসেন চালক শাহিন হোসেনকে আরও সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করার জন্য বলা হয়। একই সাথে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে কোন কারণ ছাড়াই শাস্তি প্রদান করা হবে।

সহকারী প্রকৌশলী (পরিবহন) শাহেদ রেজা, সহকারি মেকানিক ইমরান হোসেনকে ভবিষ্যতে এই ধরণের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে ৩০০শ (তিনশত) টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা নিয়ে রেজিস্ট্রার আহসান হাবিবের কাছে বরাবর প্রেরণের জন্য বলা হয়। এরপরও সহকারি প্রকৌশলী শাহেদ রেজা বিরুদ্ধে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে শাহেদ রেজার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। কর্তৃপক্ষে আমাকে ঝিনাইদহের ভেটেরিনারি হাসপাতালে শাস্তি মূলক ভাবে বদলি করেছে।

বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি আব্দুল মাজেদ জানান, ২৩ মে রিজেন্ট বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় মাহেদ রেজার সমস্ত প্রকার দুর্নীতি অনিয়মের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Read more