শাহারুল ইসলাম ফারদিন: বিশুদ্ধ পানি সংকটে দুর্ভোগ বেড়েছে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের রোগীদের। হাসপাতালের ৫টি নলকূপের ৩টিই বিকল হওয়ায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। যে দুইটি নলকূপ সচল আছে উক্ত নলকূপ দুইটির পানিতে দুর্গন্ধ বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের। এতে হাসপাতালের ভর্তি প্রায় চার শতাধিক রোগীর বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। বাধ্য হয়েই হাসপাতালের বাইরে গিয়ে অনেক দূর থেকে বিশুদ্ধ পানি আনতে হচ্ছে তাদের। বিশুদ্ধ পানি সংকটের কারণে রাতের বেলা অনেক রোগীকে বাথরুমের ট্যাপ থেকে নোংরা পানি সংগ্রহ করে পান করতে হচ্ছে।
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সদর হাসপাতালে প্রায় ৩/৪ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। আর প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগী ও স্বজনদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছে ৫টি নলকূপ। হাসপাতাল গেটের ডান পাশের নলকূপটি বিকল হওয়ায় হাসপাতালের বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে রয়েছে। শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন সাইফুল ইসলাম যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলা থেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন ৫ দিন আগে। প্রতিদিনই তিনি তার রোগীর জন্য ওষুধ ও আরো ২ স্বজনের জন্য খাবার সরবরাহ করেন। এতে তার কষ্ট না হলেও বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহের জন্য তাকে বেশ বেগ পেতে হয়। প্রথম দিন কিনে খেতে গিয়ে হিসেব কষে দেখলেন ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৬ লিটার পানির প্রয়োজন হয় তাদের। হাসপাতালের প্রধান গেটের ডান পাশে থাকা নলকূপটি নষ্ট। অপরদিকে করোনারি বিভাগের সামনের নলকূপটিও দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। বাধ্য হয়ে প্রায় দূরে একটি মসজিদের সামনের টিউবওয়েল থেকে পানি সরবরাহ করছেন এখানকার রোগীর স্বজনরা। সদর উপজেলার নুরপুর গ্রামের রাজিয়া সুলতানা পপি বলেন, আমার ৬ মাস বয়সী মেয়ে সাদিয়াকে নিয়ে গত বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতালের বিশুদ্ধ পানির নলকূপ নষ্ট থাকায় রাতে পানি সংগ্রহ করতে পারিনি। ভোরে হাসপাতালের বাইরে থেকে এক বোতল পানি কিনে আনি। এভাবে সকল রোগীই পানি সংকটে রয়েছেন বলে তিনি জানান।
রোগীর স্বজনরা আরও জানান, হাসপাতালের পাইপ লাইনে যে পানি আসছে, তাতে ময়লা ও পোকা থাকায় তা পানের অযোগ্য। তবে, সে পানি দিয়ে ধোয়া-মোছার কাজটি করছেন তারা। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, পানি সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাননি। তবে, তিনি দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড মাস্টারদের রোগীদের যাতে খাবার পানি সরবরাহে কোনো কষ্ট না হয় এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, খুব শিগগিরই যশোর পৌরসভা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে হাসপতালে দু’টি নলকূপ সরবরাহ করা হবে এর ফলে তাড়াতাড়িই হাসপাতালের সুপেয় পানি সংকটের নিরসন হবে।