রেলস্টেশন এলাকার অনেক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার বাবু ডাকাতের ছেলে সুমন ওরফে ট্যাটু সুমন, আশ্রম রোড গাড়োয়ান পট্টির আলীর ছেলে আসিফ, মেহেদী জাফরসহ বেশ ৬/৭ জনের সন্ত্রাসী ছিনতাইকারী চাঁদাবাজ এলাকার সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খাবার হোটেল ও আবাসিক হোটেলে চাঁদাবাজি করে আসছে। কিন্তু তাদের ভয়ে কেউ কোনদিন প্রতিবাদ করেন না। সম্প্রীতি এলাকার শাহিন হোটেল নামে একটি আবাসিক হোটেলে যায়। সেখানে গিয়ে প্রত্যেকদিন তারা টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তাদের হোটেলে বর্ডার থাকতে দেবে না। তাছাড়া অনেক সময় হোটেলে বর্ডার আসলে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় ও মারধর করে। ভয় ভীতি দিয়ে হোটেল থেকে বের করে দেয়।গত এক সপ্তাহ আগে সুমন,আসিফ তাদের দলবল হোটেলে গিয়ে কর্মচারীদের কাছে টাকা দাবি করে বলে শাহিন আবাসিক হোটেলের মালিক জানায়। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তারা গালিগালাজ ও মারপিট করে। পরে ম্যানেজার ও কর্মচারীদের হুমকি দিলে তারা প্রাণ ভরে হোটেলে তালা মেরে বন্ধ করে চাবি দিয়ে পালিয়ে যায় ।ওই হোটেলের মানেজার ও কর্মচারীরা মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখে সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত্মগোপনে আছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার শহরের রেল রোড সুইপার কলোনির সামনে আবাসিক হোটেল শাহিনে সরেজমিন গেলে দেখা যায় হোটেলে তালা ঝুলছে । স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছেন হোটেলটি বেশ কয়েকদিন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু কী কারনে তা তারা জানাতে পারেনি।
এবিষয়ে কথা হয় কোতয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন্স) পলাশ কুমার বিশ্বাসের সাথে। তিনি জানিয়েছেন,সন্ত্রাসীদের হুমকি মুখে হোটেল বন্ধ এই বিষয়টি কেউ কোন অভিযোগ করেনি। এছাড়া সন্ত্রাসীদের আটকের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে বিষয়টি অতিদ্রুত দেখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এলাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু হোটেল ব্যবসা নয়। যে কোন ব্যবসায়ীকে ব্যবসা করতে হলে ওই এলাকার শীর্ষ চিহ্নিত সন্ত্রাসী মেন্সেল গ্রুপকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে মারপিট ও খুন জখমের হুমকি দেয়া হয়। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ী টাকা দিয়ে থাকে। অনেকে নিরাপত্তার কারনে মুখ খুলতে চান না। কারন এর আগেও অনেকে মারপিট ও খুন জখমের হুমকি দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার স্বর্তে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রেল বাজারটা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। অনেক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও চাঁদাবাজ বা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন কাজ হয় না। উল্লেখিত সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে যশোরের কোতোয়ালি থানায় এক একজনের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে বলে এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন। এলাকার শীর্ষ ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী মেন্সেল এসব সন্ত্রাসীদের ও ছিনতাইকারীদের লালন-পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মেন্সেলকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে যশোর পুলিশ প্রশাসন আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা অচিরেই এইসব সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্তি পেতে পুলিশ প্রশাসনের উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন।