গত ১৭ বছরে হরিজন পল্লীতে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা দায় কার!

যশোর প্রতিনিধি: আর এক বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় ময়লা ছড়ানো ছিটানো রয়েছে। এসব ময়লা না নিয়ে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ কারণে শহরে চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। পৌরসভার সাথে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের যে জটিলতা আছে তা সমাধান হওয়া জরুরি।

যশোর পৌরসভা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিরন লাল সরকার বলেন, বর্তমান মেয়র আমাদের সাথে আলোচনা না করে রেলস্টেশন এলাকার হরিজন কলোনির বিদ্যুতের লাইন গত দুইদিন ধরে বিচ্ছিন্ন রেখেছে। এর প্রতিবাদে আমরা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পৌরসভার সকল পরিচ্ছন্নের কাজ বন্ধ রেখেছি। আমরা নিজের আলোচনা করেছি। আজ বৃহস্পতিবার থেকে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।

এদিকে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পৌরসভায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে যশোর হরিজন পল্লীতে বকেয়া পড়া প্রায় ৫ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে পরিশোধের ঘোষণা দিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে হরিজন পল্লীতে প্রেপেইড মিটার লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে তাদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের দায় নেবে না পৌর কর্তৃপক্ষ। তিনি সাফ জানিয়ে দেন কথায় কথায় কাজ বন্ধ করা ও ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে পৌরবাসীকে দুর্ভোগে ফেলতে দেয়া হবে না। আমরা আর জিম্মি হয়ে থাকতে চায় না। প্রয়োজনে লেবার দিয়ে পৌর শহরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হবে।

এর আগে পৌর মেয়র হায়াদর গনী খান পলাশ বলেন-অতীতের কোনো মেয়র হরিজন পল্লীর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি। অথচ এবার কোনো আলাপ-আলোচনা না করে তারা আন্দোলনে নেমেছে। আমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলছে। অথচ এসবের কিছুই আমি জানিনা। পরে তিনি একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান। তবে লিখিত কপিতে পৌরসভার কারোর কোনো সই সাক্ষর নেই।

গত ১৭ বছরে হরিজন পল্লীতে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এতদিন কিভাবে সংযোগ রাখা হয়েছে তা জানতে মুঠোফোনে যশোর (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ প্রধানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-আমি এখানে মাত্র ৩ মাস এসেছি। এত বছর কিভাবে হরিজন পল্লীতে বিদ্যুৎ সংযোগ রাখা হয়েছে-তা আমি বলতে পারবো না।

সচেতন মহল বলছেন-মূল গলদ রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগে। এক মাস, দুই মাস কিংবা ৩ মাস পর্যন্ত বিল বকেয়া পড়লে সংযোগ বিছিন্ন করার বিধান রয়েছে। কিন্তু হরিজন পল্লীতে টানা ১৭ বছর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিদ্যুৎ বিভাগ। যে কারণে দলিত স¤প্রদায়ের এসব মানুষ ধরেই নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করে আসছে। হঠাৎ সংযোগ বিছিন্ন করায় ও প্রায় ৫ কোটি টাকা পরিশোধের সামর্থ না থাকায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে পৌর কর্তৃপক্ষেরও কিছু করার নেই। সবমিলিয়ে পৌরবাসীর সামনে হাজির হয়েছে বিশাল এক দুর্ভোগের পাহাড়।#