গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ১০ জনকে ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নোয়াখালী প্রতিনিধি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে ১০ জনকে ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস এই রায় দেন।

রায়ে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ৬ আসামির প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশও দেয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মো. রুহুল আমিন, পিতা মৃত খুরশিদ আলম, মো. হাসান আলী বুলু, পিতা মৃত আবদুল হাসেম, মো. সোহেল, পিতা মৃত ইসমাইল, স্বপন, পিতা মৃত আবদুল মান্নান, ইব্রাহীম খলিল, পিতা আবুল কাশেম, আবুল হোসেন আবু, পিতা মৃত ছিড়ু মিয়া, মো. সালাউদ্দিন, পিতা ফকির আহাম্মদ, মো. জসীম উদ্দিন, পিতা মো. মোতাহের হোসেন, মো. মুরাদ, পিতা মো. রফিক ও মো. জামাল হেঙ্জু পিতা মৃত চাঁনমিয়া।

অন্যদিকে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, মো. হানিফ, পিতা ইসমাইল প্রকাশ বাগন আলী, মো. চৌধুরী, পিতা আবদুল হামিদ, মো. বাদশা আলম প্রকাশ, পিতা মৃত আহম্মদ উল্যা মোশারফ, পিতা তোফায়েল আহম্মদ , মো. মিন্টু প্রকাশ হেলাল (পলাতক) পিতা মৃত আরব আলী প্রকাশ ও মো. সোহেল পিতা আবুল কালাম।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। রায়টি অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

অন্যদিকে রায় নিয়ে, আসামিপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ হাওলাদার বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

এর আগে, গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে ১৬ জানুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত। তবে রায় লেখার কাজ শেষ না হওয়ায় ওইদিন রায় ঘোষণা করা হয়নি। পরে রায়ের পরবর্তী তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ার জেরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী।
ঘটনার পরদিন ৩১ ডিসেম্বর নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।