যশোর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলের জোর গুঞ্জন, তৃনমূল নেতাকর্মীদের উল্লাস

Share

যশোর অফিস 
আসনে বিএনপি প্রার্থী বদলের জোর গুঞ্জনে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে। গত তিন দিন ধরে এই আসনে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই খবরে বদলে যেতে শুরু করেছে শার্শার নির্বাচনি হালচাল।
এই আসনে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছিল। হঠাৎ প্রার্থী বদলের এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় চাঙ্গা হতে শুরু করেছে তৃনমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
অন্যদিকে, আশাবাদী হয়ে উঠা দুই সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নুরুজ্জামান লিটনের কর্মী-সমর্থকরা চাঙা হয়ে উঠেছেন। বিষয়টি নিষ্পত্তির পর্যায়ে না গেলেও নেতা ও তাদের কর্মীরা বুঝতে পারছেন না,আসলে কোন তথ্য ঠিক, কোনটা গুজব।
গত ১৭ ডিসেম্বর গুলশানে দলীয় চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে বিএনপি। সেখানে তিন বিভাগের মোট ১০৭ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর মধ্যে যশোর-১(শার্শা) আসনের ঘোষিত প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ এর আগে যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে বিএনপি যে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে, তার মধ্যে তৃপ্তিও ছিলেন।
তারেক রহমানের মতবিনিময় সভায় ঘোষিত প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে আমন্ত্রণ না জানানোয় যশোর-১(শার্শা) আসনে জোর আলোচনা-গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। সভায় ডাক না পাওয়া মফিকুল হাসান তৃপ্তি ছুটে যান ঢাকায়। বসে থাকেননি দলীয় অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী।
এই বিষয়ে দলীয় সূত্র বলছে, যশোর-১ (শার্শা) আসনে দলীয় প্রার্থী বদল হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মফিকুল হাসান তৃপ্তির বদলে আবুল হাসান জহির ও নুরুজ্জামান লিটনের মধ্যে যেকোন একজনের সম্ভাবনা রয়েছে।
মফিকুল হাসান তৃপ্তি বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ‘সংস্কারপন্থি’ আখ্যা পাওয়া সত্ত্বেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান। ওই নির্বাচনে তৃপ্তিকে দৃশ্যমান দেখা যায়নি।
আবুল হাসান জহির বর্তমান শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি। নুরুজ্জামান লিটন শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। নুরুজ্জামান লিটন এর আগে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
প্রার্থিতা বদলের সম্ভাবনার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট নেতারা মুখ খুলতে চাননি।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু জানান,মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বক্তব্য স্পষ্ট বিগত ১৭ বছর যারা হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের দুর্দিনে পাশে ছিলেন। তাদের যেকোন একজনকে দলীয় মনোনয়ন দিলে তারা তার পক্ষে কাজ করবে।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি সব আসনে বিকল্প প্রার্থী রেখেছে। প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা হলেও প্রয়োজনে যেকোনো আসনে প্রার্থী বদল করা হতে পারে। সম্ভাব্য সেই বদলের তালিকায় যশোরের দুটি আসনের প্রার্থীরা থাকতে পারেন। ইতিমধ্যে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে বলেও তারা আভাস দিয়েছেন।
প্রার্থী বদলের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর নির্বাচনি এলাকায় হাওয়া বদলে যাচ্ছে। শার্শায় তৃপ্তি অনুসারীরা মুষড়ে পড়েছেন। তারা ভোটের মাঠ থেকে এক প্রকার উঠে গেছেন। আর চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন আবুল হাসান জহির ও নুরুজ্জামান লিটনের অনুসারীরা। তারা অপেক্ষায় আছেন, দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এলাকায় ফিরলে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু করবেন।
দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, যশোর-১ (শার্শা) আসনে প্রাথমিকভাবে ঘোষিত প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি ‘পরিস্থিতি প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে’ বিবেচনায় ১৭ ডিসেম্বরের পরই ঢাকা চলে যান। ফিরে এসে তিনি ফের নির্বাচনি মাঠে নেমেছেন। দলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল হাসান জহির ও নুরুজ্জামান লিটনের অনুসারীরা প্রার্থিতা বদলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মহাসড়কে অবস্থান এবং বিক্ষোভ করেছেন। এই সব কর্মী এখন প্রার্থী বদলের গুঞ্জন শুনে চাঙা হয়ে উঠেছেন। তারা এখন সুসংবাদের অপেক্ষায় আছেন।

Read more