যশোর অফিস
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. হোসাইন আল মামুন। আবাসন ও ঘরভাড়া সংক্রান্ত অনিয়মের মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি যবিপ্রবিতে ট্রেজারার হিসেবে যোগদান করেন প্রফেসর ড. হোসাইন আল মামুন। নিজস্ব আবাসন না থাকায় তিনি ১৭ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি (টিচার্স নেটওয়ার্ক সেন্টার)পরিচালিত ভিআইপি ডরমেটরিতে অবস্থান শুরু করেন এবং গত ৩১ মে পর্যন্ত সেখানে থাকেন। মোট ৪ মাস ১৫ দিন বা ১৩৫ দিন তিনি ওই ডরমেটরিতে বসবাস করেন।
টিএসসির হিসাব অনুযায়ী, উক্ত ভিআইপি ডরমেটরির দৈনিক ভাড়া ১ হাজার টাকা।সে হিসেবে ১৩৫ দিনে তার মোট ভাড়া দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী,এধরনের বিল অনুমোদনের জন্য অর্থ কমিটি ও রিজেন্ট বোর্ডের অনুমোদন প্রয়োজন হলেও এ ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ২ ডিসেম্বর ট্রেজারারের কার্যালয় থেকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-৯) দেবব্রত সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ট্রেজারার প্রফেসর ড. হোসাইন আল মামুনের ডরমেটরি ভাড়া বাবদ মাসিক মাত্র ৩ হাজার টাকা হিসেবে ৪ মাসে মোট ১৩ হাজার ৫০০ টাকা মঞ্জুর করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টিএসসি পরিচালকের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, উপাচার্যের নির্দেশক্রমে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাড়া প্রদানের শর্তে তিনি ডরমেটরিতে অবস্থান করেছেন এবং এ সময়ে দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত কাজে বিভিন্ন সময় বাইরে অবস্থান করতেন। অথচ ট্রেজারারের নিয়োগবিধি অনুযায়ী তাকে সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে ট্রেজারারের বেতন শিট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তিনি সরকারের কোষাগার থেকে ঘরভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৩০ হাজার ৫৯৬ টাকা করে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮৪ টাকা গ্রহণ করেছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তিনি প্রতি মাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা পরিশোধের সুপারিশ করেন এবং ওই চিঠি নিজেই ফরওয়ার্ড করেন।এতে করে ঘরভাড়া বাবদ মোট ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ট্রেজারার প্রফেসর ড. হোসাইন আল মামুনের মোবাইল নম্বরে (০১৭১১-৯৮৭২৬৬) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন রিসিভ পাওয়া যায়নি।
এছাড়া টিএসসি পরিচালক জসিমের সঙ্গে (০১৯১৪-৬১৮২৭১) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি ট্রেজারার দপ্তর থেকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।