যশোরে গৃহবধূ দেবী টিকাদার হত্যাকান্ডে প্রেমিক পাঁচু বিশ্বাসের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

যশোর প্রতিনিধি
যশোর মণিরামপুরের কুচলিয়া গ্রামের গৃহবধূ দেবী টিকাদারকে হত্যার দায়ে পরোকীয়া প্রেমিক পাঁচু বিশ্বাস ওরফে মৃত্যুঞ্জয়কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। মঙ্গলবার ৭ নভেম্বর অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতে বিচারক সোহানী পূষণ এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত পাচু বিশ্বাস মণিরামপুর উপজেলার নেবুগাতি গ্রামের জীবন বিশ্বাসের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বকুল।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, দেবি টিকাদার তার স্বামী পীযুষ টিকাদার ও দুই সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতেই বসবাস করছিলেন। এরমাঝে ২০১৯ সালে পাচু বিশ্বাসের সাথে দেবী টিকাদারের প্রথমে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে পরোকিয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরমাঝে স্বামী সন্তান ফেলে পাচু বিশ্বাসের সাথে পালিয়ে যায় দেবী টিকাদার। কয়েক মাস পর অভয়নগের নওয়াপাড়া বাজার থেকে দেবী টিকাদারকে বাড়িতে নিয়ে আসে স্বামী-সন্তানেরা। তারা ফের সংসার করতে থাকে ।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল রাত আটটায় দেবী টিকাদার কিস্তির টাকা আনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে আর বাড়ি ফেরেনা সে। ৫ এপ্রিল সকালে প্রতিবেশী মুকুন্দ সরকারের পুকুরপাড় থেকে ক্ষতবিক্ষত দেবী টিকাদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত দেবী টিকাদারের স্বামী পীষুষ টিকাদার বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে মাণিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে ডিবি পুলিশ তদন্তের দায়িত্বি পায়।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে দেবী টিকাদারের পরোকিয়া প্রেমিক পাচু বিশ্বাসকে আটক করেন। পরবর্তীতে সে হত্যার কথা স্বীকার করেন।  তিনি পরিকল্পনা করে দেবী টিকাদারকে ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে পুকুর পাড়ে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর লাশ ফেলে পালিয়ে যায় বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও দেন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামি দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই বছরের ২৭ আগস্ট আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি পাচু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামির উপস্থিতিতেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠান।