যশোরে ধর্ষণ মামলা না মেটালে আদালত চত্তরে গুলি করার হুমকি

যশোর প্রতিনিধি 
যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ধর্ষণ মামলা মিটিয়ে ফেলতে বাদী ও তার পরিবারকে চাপ দেয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত ধর্ষকের বাবা ওলিয়ার রহমান বাহাদুরপুরের মতিয়ার রহমানসহ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে এই হুমকি ও চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
অবস্থা এতোটাই বেগতিক যে মামলা না মেটালে আদালত চত্তরে গুলি করার হুমকি দেয়া হয়েছে মামলার বাদী ভুক্তভোগী নারীর মাকে। এ ঘটনায় বাদী পবিবার চরম হতাশা ও উৎকণ্ঠায় সময় কাটাচ্ছেন। তারা এ ব্যাপারে দ্রুত পুলিশি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে তথ্য মিলেছে, মোবাইলের মাধ্যমে বাহাদুরপুরের নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর সাথে পরিচয় হয় তালবাড়িয়া কুতুবপুরের ওলিয়ার রহমানের ছেলে ড্রাইভার রাসেল হোসেন রাকিবের। সে প্রায়ই ফোনে ওই ছাত্রীকে কু প্রস্তাব দিত। ২৭ জুন সে হঠাৎ করে চলে আসে স্কুলছাত্রীর বাহাদুরপুরের বাড়িতে। আর জোর করে ঘরে প্রবেশ করে পানি চায়। এরপর ঘরে ফেলেই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে। বাহাদুরপুরের সাগর, পান্নু, ইবাদুলসহ অনেকে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা যশোর কেতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলে ২৮ জুন সকালে মামলা রেকর্ড হয়। আর আটক হয়ে যায় অভিযুক্ত ধর্ষক রাকিব। মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তালবাড়িয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন, সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। মামলার রায় দেয়ার আগ মুহূর্তে অভিযুক্ত রাকিব ও তার বাবা ওলিয়ার রহহমান অপকৌশল নিয়েছেন বলে অভিযোগ। মামলার বাদী ভুক্তভোগী ছাত্রীর মাকে চাপ দেয়া হচ্ছে ২০ হাজার টাকায় মামলা মিটিয়ে ফেলতে হবে। আদালতে বলতে হবে স্থানীয়ভাবে মামলা মিমাংশা হয়ে গেছে। এর ব্যত্যয় করলে গুলি করা হবে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্ত রাকিবের বাবা ওলিয়ার রহমান তার গ্রামের মতিয়ার রহমান, ফয়জুর রহমান, পান্নু মোল্লা, ইবাদ ও আব্দুর রশিদকে তার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। মাত্র ২০ হাজার টাকা না নিলে বিনা টাকায় মামলা মেটাতে হবে বলে শাসিয়েছে মতিয়ার। এছাড়া অভিযুক্ত রাকিব ও তার বাবার গ্রামে একটি ক্লাবে গিয়ে লোকজন ধরছে মামলাটি মিটিয়ে ফেলতে। নানামুখি হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় তিনি নিরাপত্তহীনতায় রয়েছেন। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
এদিকে ভুক্তভোগীর মামা এলাকার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনা সত্য, মামলা মিমাংসা করে নিতে অভিযুক্ত রাবিক ও তার বাবা বাহাদুরপুরের মতিয়ারসহ কয়েকজনকে ধরেছে। মতিয়ারসহ কয়েকজন হুমকিও দিয়েছে সত্য। মাত্র ২০ হাজার টাকার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যা খুবই নিন্দনীয়, তারা সঠিক বিচার চান, টাকা নয়। অভিযুক্ত রাকিব মাস কয়েক আগে আরো একটি মামলায় জেলখানায় ছিল। সম্প্রতি জামিন পেয়েছে। চোরের মায়ের বড় গলার মত রাকিব ও তার বাবা ওলিয়ার তাদের পক্ষের লোকজন হম্বি তম্বি করছে। আর আসামি পক্ষের মহুরি মাসুদ রানা আসামি পক্ষের হয়ে অনৈতিক নানা প্রস্বাত দিয়েছেন। ওই মহুরি মাসুদ রানাও বাদী পক্ষের হয়ে দেন দরবার করছেন এর প্রতিকার হওয়া জরুরি।
এদিকে অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে আসামি রাকিবের বাবার ফোনে কয়েক দফা ফোন দিলেও তা রিসিভ হয়নি।
তবে মামলায় তাদের পক্ষে আইনজীবীর মহুরি মাসুদ রানার সাথে কথা বললে তিনি জানান হুমকির অভিযোগ সত্য নয়। আসামি পক্ষ নিয়ে চাপ দিয়েছেন তাও সঠিক নয়। টাকা পয়সা দেয়া নেয়াতো কোনো ব্যাপার না। মূল কথা হচ্ছে তিনি স্থানীয়ভাবে মামলা মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন মাত্র।