দেশে আবার প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু ঊর্ধ্বগতির দিকে। ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে ভাইরাসটি। এ পরিস্থিতিতে চলমান একুশে বইমেলা বন্ধ করার আলোচনার মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মানুষের ঢল নেমেছে। এতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রাণের বইমেলা।
করোনার সংক্রমণ হঠাৎ বাড়তে থাকায় গত কয়েকদিন ধরেই বইমেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। তবে শুক্রবার মেলাজুড়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হু হু করে বাড়তে থাকায় সামগ্রীক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ দফা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৃহস্পতিবার কমিটির এক সভায় এই ৫ দফা সুপারিশ করা হয়। এতে অবিলম্বে বইমেলা, সামাজিক অনুষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্রসহ যে কোনো ধরনের মেলা বন্ধ করার সুপারিশ করে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
শুক্রবার মেলার ১৬তম দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ১৫ লাখ বর্গফুটজুড়ে ছিল বইপ্রেমীদের ভিড়। করোনার চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে এদিন মেলায় ছুটে আসেন বইপ্রেমীরা। আর স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে ঘুরে পছন্দের বইটি কিনেই বাড়ি ফিরেন। শুক্রবার ছুটির দিনের বিকাল থেকে মেলা বন্ধের আগ পর্যন্ত উচ্ছ্বাস ছিল বইপ্রেমীদের মাঝে।
পুরো মেলা ঘুরে দেখা যায়, থেমে নেই বিক্রি। মেলাতে এখন যারা আসছেন তারা বেশিরভাগই বইয়ের ক্রেতা। মেলার শুরু থেকেই এবার বিক্রি কম এমনটা শোনা গেলেও এই সময়ে এসে কিছু বই বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে বইমেলার সময় কমিয়ে দেওয়ার ফলে প্রত্যেকেই এখন দেরি না করে বা আড্ডার পরিবর্তে বই কেনাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।
আগামীকাল শনিবার মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং শেষ হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
নতুন বই: বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্যমতে, মেলার ১৬তম দিনে নতুন বই এসেছে ১৯৯টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৩৩টি, উপন্যাস ৩৭টি, প্রবন্ধ ৭টি, কবিতা ৫৪টি, গবেষণা ৯টি, ছড়া ৪টি, শিশুসাহিত্য ১টি, জীবনী ৪টি, রচনাবলি ৩টি, মুক্তিযুদ্ধ ৬টি, বিজ্ঞান ২টি, ভ্রমণ ৪টি, ইতিহাস ২টি, রাজনীতি ১টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য ২টি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ২টি, রম্য/ধাঁধার ১টি, ধর্মীয় ৩টি, অনুবাদ ১টি, সায়েন্স ফিকশন ২টি এবং অন্যান্য ২১টি বই।
কবি প্রকাশনী প্রকাশ করেছে খান মাহবুবের বই ‘করোনায় কারসাজি’। করোনা মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তকে নতুন বাস্তবতায় দাঁড় করিয়েছে। শহর ছেড়ে অনেকে গ্রামমুখী হয়েছেন। এসব বিষয় বইটিতে উঠে এসেছে। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। দাম ২০০ টাকা।