ভুল প্যাথলজি পরীক্ষার খেসারত দেওয়ার অভিযোগ শিশু তাসনিয়ার যশোর ইবনে সিনা হসপিটালে 

যশোর প্রতিনিধি 
যশোর ইবনে সিনা হসপিটাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারের ভুল প্যাথলজি পরীক্ষার খেসারত দিতে হয়েছে ১২বছরের শিশু তাসনিয়া আক্তারকে। প্যাথলজি প্রতিবেদনের হেপাটাইটিস (পজিটিভ) শনাক্ত হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিকসহ বেশকিছু ওষুধ সেবন করানো হয়। এতেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।
তখন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাকের কাছে সন্দেহ হয়। তিনি অভিভাবকদের অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে একই পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। অভিভাবকরা শহরের নামি-দামি দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে পূণরায় পৃথক ভাবে হেপাটাইটিস পরীক্ষা করান। তাদের প্রতিবেদনের দেখা যায় দুইটি প্যাথলজি প্রতিবেদনের হেপাটাইটিস (নেগেটিভ) শনাক্ত হয়। প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসাক শিশুটির চিকিৎসা পরিবর্তন করেন। এভাবে অতিরিক্ত খরচের পাশাপাশি ভুল চিকিৎসা আর হয়রানির শিকার হতে হয়েছে শিশু,অভিভাবক ও স্বাজনদের।
অভিযোগ নিয়ে শিশুটির অভিভাবক ইবনে সিনা হসপিটাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারের উপ-পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মাদ আলীর কাছে গেলে তিনি ভুল রিপোটের জন্য অভিভাবকের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা না করে হেপাটাইটিস (নেগেটিভ) উল্লেখ করে আর একটি প্যাথলজি প্রতিবেদন রোগীর বাবার কাছে দিয়েছে। শিশু তাসনিয়া আক্তার যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার বাবুল আক্তাররে মেয়ে।
বাবা বাবুল আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ১১ মে জ্বারসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে আমার শিশুকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে চিকিৎসক পরীক্ষ-নিরীক্ষার জন্য নিদের্শ দিলে শহরের ইবনে সিনা থেকে শিশুটির ৮ প্রকারের পরীক্ষা করানো হয়। এর মধ্যে হেপাটাইটিস পরীক্ষা (পজিটিভ) শনাক্ত হয়। সে রিপোট অনুযায়ী চিকিৎসক শিশুটির চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করেন। শিশুকে ওয়ার্ডের মধ্যে আলাদা রাখা হয়। স্বানদের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি সেবিকারা শিশুর কাছে যেয়ে ওষুধ দেওয়ার সময় হাতের গোলফস অভিভাবকের কাছে চেয়ে নিচ্ছেন। এতে করে শিশু ও স্বজনরা মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। কিন্তু দু’দিন পরে শিশুটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হয়ে অবনতি হয়। তখন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পলাশ কুমারের সন্দেহ হয়। তিনি অভিভাবকদের পূণরায় অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে হেপাটাইটিস পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শহরের ১৫ মে ল্যাবস্ক্যান এবং ১৬ কুইন্স হসপিটাল থেকে পরীক্ষা করিয়ে হেপাটাইটিস(নেগেটিভ) শনাক্ত হয়। তখন চিকিৎসক ইবনেসিনার প্যাথলজি প্রতিবেদন ভুল শনাক্ত করেন।
এব্যাপারে যশোর মেডিকেল কলেজের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুস সামাদ জানান, ইবনে সিনার এত বড় ভুল মেনে নেওয়া যায় না। তাদের ভুল রির্পোটের কারনে একটি শিশুর জীবন যায়-যায় অবস্থা।
এ ব্যাপারে ইবনে সিনা হসপিটাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারের উপ-পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মাদ আলী বলেন, শিশুটির বাবা অভিযোগ করেছেন। আসছে ওয়ার্ড বয়ের ভুল। তারা ল্যাব থেকে ওই রিপোট সরবরাহ করেছে। ভুল রিপোট সরবরাহের জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও বলেন তাদের ল্যাবেও এইক রিপোটর্ হেপাটাইটিস(নেগেটিভ) শনাক্ত হয়। তাই স্বজনদের কাছে ওই রিপোর্ট মঙ্গলবার সরবরাহ করা হয়েছে।