যশোরের চৌগাছার শহিদুলের সিঙ্গাপুর যাওয়া হলোনা সড়কে ধরল তার প্রাণ

চৌগাছা(যশোর)প্রতিনিধিঃ 
যশোরের চৌগাছায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রন হারিয়ে  সড়কের পাশের বাবলা গাছে মেরে শহিদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের জলকর মাধবপুর গ্রামের নবাব হোসেনের ছেলে।
শনিবার (১৩মে) সকালে উপজেলার মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ থেকে মাশিলা বাজার সড়কের ধুনারখাল নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
শহিদুলের চাচা মিঠু হোসেন জানান, ওই সড়ক দিয়ে মাশিলার দিকে যাওয়ার পথে ধুনারখাল নামক স্থানে এসে দেখি দু’জন লোক রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ধরে রেখেছেন। তারা আমাকে বলেন, ভাই ছবি তুলে একটু নেটে (ফেসবুকে) দিয়ে দাও। বাবলা গাছে মেরে দিয়ে ছেলেটির এই অবস্থা হয়েছে। তখন সড়ক থেকে  তাকে হাসপাতালে নেয়ার মতো কোন যানবাহন ছিলো না। আমি ছবি তুলতে গিয়ে দেখি আমারই আপন ভাইপো (ভাইয়ের ছেলে) শহিদুল। তার মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশে ভাঙ্গাচুরা অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর কোনভাবে একটি গাড়ি (ইঞ্জিনচালিত স্থানীয় যান) ম্যানেজ করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে আসার পরও কিছুটা নড়াচড়া করছিলো। এরপরই সে মারা যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় শহিদুলের বাম হাত ভেঙ্গে যায়, মাজা ও মাথায় গুরুতর জখম হয়ে মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শহিদুলের স্ত্রী জানান, প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে শহরের রাব্বানী স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে দিতে মালেশিয়া ফেরৎ ছোট ভাইয়ের নতুন কেনা একটি পালসার মোটরসাইকেলে করে চৌগাছায় আসেন তিনি। এরপর হাসপাতাল থেকে মোবাইলে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি তার লাশ। তিনি আরও বলেন, শহিদুল সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য ৯লাখ টাকা জমা দিয়েছে। ভিসাও হয়ে গেছে। আরও ৩লাখ টাকা দিয়ে একমাসের মধ্যেই তার সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা ছিলো।
আহাজারি করে শহিদুলের মালেশিয়া ফেরৎ ছোটভাই শহিদুলের স্ত্রীকে বলছিলেন, আমি তো মোটরসাইকেল আরেকটা কিনতে পারবো। তুমি তো এই বয়সেই বিধবা হয়ে গেলে। এসময় শহিদুলের বাবা-মাসহ স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
শহিদুলের পারিবারিক সূত্রে আরও জানা যায়, তাদের পৈত্রিক বাড়ি উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বুন্দেলীতলা গ্রামে। তবে তার পিতামাতা তিন সন্তান নিয়ে অনেক আগে থেকেই শহিদুলের মামার বাড়ির গ্রাম জলকর মাধবপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।