আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক : আট দিনের রিমান্ড চলার মধ্যেই আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেপ্তার পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন দেশটি সুপ্রিম কোর্ট। আদালত একই সঙ্গে ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে ‘বেআইনি’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) উমর আতা বন্দিয়ালের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছেন।
শীর্ষ আদালত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
এর আগে আজ ইমরান খানকে এক ঘণ্টার মধ্যে হাজির করতে জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরোকে (ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো–এনএবি) সিজেপি, বিচারপতি মুহাম্মদ আলী মাজহার এবং বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহসহ তিন সদস্যের এসসি বেঞ্চ নির্দেশ দেন।
সিজেপি শুনানির সময় বলেছিলেন, ‘আদালত আজ একটি উপযুক্ত আদেশ জারি করবে কারণ আদালত মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
পরে বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটের পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইমরান খানকে আদালতে হাজির করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারকের গেট দিয়ে এসসির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইমরানের আগমনের আগে, সুপ্রিম কোর্টের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। রেঞ্জার্স এবং পুলিশের দল এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী স্কোয়াডকে ডাকা হয়েছিল।
মিডিয়া আরও জানিয়েছে, ইসলামাবাদের ডিআইজি (নিরাপত্তা) নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আদালতে পৌঁছেছেন। এদিকে, পিটিআই তার সমর্থকদের শীর্ষ আদালত থেকে দূরে থাকতে বলেছে।
ইমরান আদালতে আসার পর শুনানি পুনরায় শুরু হলে সিজেপি বন্দিয়াল পিটিআই চেয়ারম্যানকে রোস্ট্রামে ডেকে বলেছিলেন, ‘আপনাকে দেখে আমরা খুশি। আপনার গ্রেপ্তারের পর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। আমরা দেশে শান্তি চাই। বলা হচ্ছে আপনার (পিটিআই) কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে এসেছে। আদালত আপনার কথা শুনতে চায়।
শীর্ষ বিচারক পর্যবেক্ষণ করেছেন দেখেছেনে পিটিআই প্রধান ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বায়োমেট্রিক কোর্টরুমে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি আইনের আদালতে আসেন, এর অর্থ হল তিনি আদালতের সামনে আত্মসমর্পণ করেন।
বিচারপতি বান্দিয়াল বলেন, ইমরানের গ্রেপ্তার ‘বেআইনি’ এবং পিটিআই প্রধানকে আইএইচসি-তে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, ‘আপনাকে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। শুক্রবার আপনাকে আইএইচসি-তে হাজির হতে হবে। পাশাপাশি ইমরান সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ থাকার নির্দেশনাও দেন তিনি।
সিজেপি আদেশটি দেওয়ার পরে ইমরান আদালতে থাকাকালীন তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ থাকতে বলেন এবং জানান দেশের কোনো ক্ষতি করা উচিত নয়। তিনি শুধু দেশে নির্বাচন চান বলেও মন্তব্য করেন।
তার আইনজীবী বলেছেন, ইমরানকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন তার বায়োমেট্রিক্স করানোর প্রক্রিয়া চলছিল। রেঞ্জাররা ইমরান খানের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
সিজেপি বান্দিয়াল পর্যবেক্ষণ করেছেন, আদালতের রেকর্ড দেখায় যে মামলাটি শুনানির জন্য নির্ধারিত হয়নি। আইনজীবী আদালতকে বলেন, বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে আপিল করা যাবে না।
সিজেপি বন্দিয়াল আরও বলেন, আদালতের নির্দিষ্ট ‘সম্মান’ ছিল। অতীতের একটি ঘটনার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এনএবি সুপ্রিম কোর্টের পার্কিং (লট) থেকে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। আদালত তখন গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রত্যাহার করেছিল।
সিজেপি ইমরানের আইনজীবীকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করার জন্য কতজন রেঞ্জার্স কর্মী এসছিল জানতে চাইলে আইনজীবী প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, পিটিআই প্রধানকে গ্রেপ্তার করার জন্য ১০০ জন রেঞ্জার কর্মী আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছিলেন।