যশোর অফিস
যশোরের প্রবীণ রাজনীতিক, সমাজসেবক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য (৯২) পরলোকগমন করেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি যশোর শহরের বেজপাড়ায় নিজ ভাড়া বাসায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য ছিলেন সততা, আদর্শ ও ত্যাগের প্রতীক। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে যশোরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। মণিরামপুরে হাসপাতাল স্থাপন, বিদ্যুৎ সংযোগ সম্প্রসারণ, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালুএসব উদ্যোগে তাঁর প্রত্যক্ষ অবদান ছিল। ব্যক্তিজীবনে তিনি সর্বদা সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং কখনো রাজনৈতিক সুবিধাবাদের পথে হাঁটেননি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জীবনের শেষ সময়টুকু তিনি যশোরের বেজপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী মনিকা ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে কাটিয়েছেন। চার সন্তানদের কেউই রাজনীতিতে আসেননি। বড় ছেলে বাবলু ভট্টাচার্য্য চলচ্চিত্র শিল্পে কর্মরত, বড় মেয়ে তপতী পরিচিত আবৃত্তিশিল্পী ও বর্তমানে কলকাতায়, ছোট ছেলে পার্থ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যুক্ত, আর ছোট মেয়ে তাপসী থাকেন সুইডেনে।
স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে স্মরণ করছেন “সততা যার প্রাপ্তি, আদর্শ যার পরিচয়”এই বাক্যে।
পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য শুধু একজন রাজনীতিকই ছিলেন না; ছিলেন নীতি, আদর্শ ও দেশপ্রেমের জীবন্ত উদাহরণ। তাঁর মৃত্যুতে যশোরের রাজনীতি এক আদর্শবান নেতাকে হারালো যাঁর মতো মানুষ রাজনীতিতে আজ বিরল।
জাতীয় রাজনীতির ইতিহাসে তাঁর নাম লেখা থাকবে সততা ও নীতির আলো ছড়িয়ে দেওয়া এক নির্ভীক নেতারূপে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর আদালত চত্বরে আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে যশোরের স্থানীয় শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।