যশোর অফিস
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র একটি তুচ্ছ ঘটনায় হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সামনে শিক্ষকের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনার বিচার চাইতে যাওয়ায় তাকে উল্টো ফেলের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ অক্টোবর রাতে যবিপ্রবিতে র্যাগিং ডে উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানস্থলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও (পরবর্তিতে ডিলেট করা হয়েছে) সূত্রে জানা গেছে, যবিপ্রবিতে দুই দিনব্যাপী র্যাগিং দিবস উপলক্ষ্যে কনসার্ট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠান চলাকালে যবিপ্রবির ‘ইইই’ বিভাগের ছাত্র আনিসকে ধুমপান করতে দেখেন ছাত্র পরামর্শক শিক্ষক ডক্টর রাফিউল। এসময় তিনি ওই ছাত্রকে কয়েকটি চড়-থাবা মারেন। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সামনে চড় মারায় চরমভাবে অপমানবোধ করেন ছাত্র আনিস। পরদিন তিনি এ ঘটনার বিচার চাইতে বিভাগীয় প্রধানের কাছে যান। বিভাগীয় প্রধান ছাত্র আনিসের কাছ থেকে সব শুনে শিক্ষক ডক্টর রাফিউল তাকে ফের করিয়ে দিতে পারেন বলে জানান। পরবর্তিতে আনিস প্রক্টর ডক্টর ওমর ফারুকের কাছে যান বিচার চাইতে। এসময় প্রক্টর তাকে পঁাচ ঘন্টা বসিয়ে রাখেন। এক পর্যায়ে তিনিও আনিসকে বিভাগীয় প্রধানের মতো শিক্ষক রাফিউল তাকে নানাভাবে নম্বর কম দিয়ে ফেল করিয়ে দিতে পারেন মর্মে জানান।
এদিকে, কোন জায়গায় বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগী ছাত্র আনিস হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সামনে অপমান সইতে না পেরে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও ছাড়েন। পরবর্তিতে ওই ভিডিওটি ফেসবুক থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। যদিও অনেকেই ভিডিওটি কপি করে রেখেছেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, ওই ছাত্রকে নানাভাবে চাপ দিয়ে ভিডিওটি ডিলিট করতে বাধ্য করা হয়েছে। তার আগেই ফেসবুকে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। এখন ওই ছাত্র লজ্জ্বায় ক্যাম্পাসে বের হতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যবিপ্রবির এক কর্মকর্তা বলেন, ছাত্র আনিসের অপরাধ খুবই সামান্য, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র এবং প্রাপ্ত বয়স্ক। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সামনে তাকে এভাবে অপমান করা ওই শিক্ষকের উচিত হয়নি। তিনি আরও বলেন, যতদূর জানা যায় শিক্ষক ডক্টর রাফিউলের একটু মানসিক সমস্যা রয়েছে। তাকে ছাত্র পরামর্শক করা ঠিক হয়নি। তিনি যা করেছেন তার বিচার এবং ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। কারণ ওই ছাত্র অপমান সইতে না পেরে দুর্ঘটনাও তো ঘটাতে পারতো।